‘টাকা গুনে নেওয়া সুন্নত’ বলে ভাইরাল হওয়া চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে তথ্যটি নিশ্চত করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
তিনি জানান, সাময়িকভাবে এসআই মাহফুজুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ-ফরিদগঞ্জ) সার্কেল পঙ্কজ দেকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত ২-৩ দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে ‘ঘুষের টাকা গুনে গুনে নেওয়া সুন্নত’ এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুর রকিবের নজরে আসলে তিনি অভিযুক্ত মাহফুজুরকে প্রাথমিকভাবে হাজীগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করেন।
এসআই মাহফুজুর রহমানের ভাইরাল হওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, একটি দোকানে সিভিলে উপপরিদর্শক মাহফুজুর রহমান একটি চেয়ারে খোশ মেজাজে বসে আছেন। তিনি বলছেন, ‘১০ হাজার টাকা কইছি।’ সামনে বসে থাকা এক ব্যক্তি বলছেন, ‘সবুরে মেওয়া ফলে।’ এসআই তার দিকে মনোযোগ দিয়ে আঙুল উঁচিয়ে বলেন, ‘এক টাকাও কম হইতো ন।’ সামনে বসে থাকা ব্যক্তি বলেন, ‘বস, একটু বসেন।’ এসআই তখন মুচকি হাসেন। মুখে আলতো করে হাত বুলিয়ে বলেন ‘কাম শেষ, এখন টিয়া।’
একপর্যায়ে এসআই মাহফুজ এক ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে দ্বিতীয় ব্যক্তির দিকে হাত এগিয়ে দিলে দ্বিতীয় ব্যক্তি মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে মাহফুজের হাতে দেন। মাহফুজকে এক সময় বলতে শোনা যায়, ‘টাকা গুনে গুনে নেওয়া সুন্নত’।
জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে ছেলের নামে থানায় অভিযোগ দিতে আসেন হাজীগঞ্জ থানার কংগাইশ গ্রামের এক বাসিন্দা। অভিযোগ দিতে এসে এসআই মাহফুজকে দিতে হয় ঘুষের প্রথম কিস্তি।
তারপর পুত্রবধূ এবং ছেলে বাবার কাছে ক্ষমা চাইলে পারিবারিক সমস্যা মিটে যায়। তবুও এসআই মাহফুজকে দিতে হয় ঘুষের দ্বিতীয় কিস্তি। আর সেই কিস্তি নিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘টাকা গুনে নেওয়া সুন্নত’।