দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, মানুষের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর কোরিয়াপন্থি কমিউনিস্ট শক্তির হাত থেকে দেশ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করা হলো। যদিও চিরবৈরী প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এ সামরিক আইন জারি করা হয়েছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
ভাষণে ইউন সুক-ইওল বলেন, ‘উদারপন্থি দক্ষিণ কোরিয়াকে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন শক্তি উৎখাত করতে, আমি জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করছি।’
তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মানুষের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। তিনি বলেন, দেশে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির উদ্ভব হয়েছে। বিরোধী দলগুলো সংসদীয় প্রক্রিয়া জিম্মি করে দেশকে সংকটের মাঝে ফেলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা ওনের মানের ব্যাপক পতন ঘটেছে; যা নিয়ে চাপের মুখে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এরইমধ্যে সরকারের বাজেট প্রস্তাব থেকে ৪ ট্রিলিয়ন ওনেরও বেশি কাঁটছাট করতে বিরোধী দলের একটি প্রস্তাব সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন পায়।
এই প্রস্তাব সমর্থনকারীদের উত্তর কোরিয়াপন্থী হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নির্মূলের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। ইউন বলেন, বিরোধীদের এই পদক্ষেপ সরকারি প্রশাসনের প্রয়োজনীয় কার্যাবলিকে দুর্বল করে ফেলবে। এর পরেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিলেন তিনি।
তবে প্রেসিডেন্টের সামরিক আইন জারির এই সিদ্ধান্তেরে বিরোধীতা করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির শীর্ষ নেতা হান ডং-হুন। তিনি সামরিক আইন জারির ঘোষণাকে ‘ভুল’ আখ্যা দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্টের সামরিক শাসন জারির পর জরুরী বৈঠক ডেকেছে অন্যতম বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি।