সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পতনের পর বিদ্রোহী জোটের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতে দামেস্কের ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে দাঁড়িয়ে তার প্রথম বিজয়ী বক্তব্য দেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদন থেকে এ বিজয়ী বক্তব্যের কথা জানা যায়।
বিজয়ী বক্তব্যে আল-জোলানি সিরিয়ার নতুন যুগের সূচনার কথা বলেন এবং ইরান ও রাশিয়াকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
আল-জোলানি বলেন, এখন থেকে সিরিয়ার ভূখণ্ড ইরান ও রাশিয়ার স্বার্থ পূরণের মঞ্চ নয়, বরং এটি একটি স্বাধীন এবং বহিরাগত শক্তির প্রভাবমুক্ত দেশ হবে।
তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইরান ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপ তিনি বরদাশত করবেন না। পাশাপাশি, তিনি লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর সিরীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ বন্ধ করার ইঙ্গিত দেন।
আল-জোলানি সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যতের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই বিজয়ের মাধ্যমে সিরিয়া একটি নতুন যুগের দিকে পা বাড়িয়েছে। সিরিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বিপদের উৎস হবে না, বরং এটি শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
আল-জোলানি তার বক্তব্যে সিরীয় জনগণের সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের প্রশংসা করেন, যা হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) যোদ্ধাদের মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, এই বিজয় এসেছে দীর্ঘ সময় কারাবন্দি থাকা এবং প্রচণ্ড কষ্ট সহ্য করা মানুষের আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ।
আল-জোলানি সিরিয়ার ধর্মীয় ও সম্প্রদায়িক বিভাজন দূর করার জন্য একটি শান্তির বার্তা দেন। সিরিয়ার সুন্নি মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও আসাদ শিয়া আলাওয়াত সম্প্রদায়ের ছিলেন। তিনি তার ভাষণে সব ধর্মাবলম্বী সিরীয়দের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া, তিনি সিরিয়ার নাম খারাপ হওয়ার জন্য স্বৈরশাসক আসাদের শাসনকে দায়ী করেন। সিরিয়া ক্যাপটাগন মাদক চোরাচালানের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছিল। তবে, আল-জোলানি সিরিয়াকে একটি স্বচ্ছ এবং মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে পুনর্নির্মাণ করার অঙ্গীকার করেছেন।
এই বিজয়ের বার্তা শুধু সিরীয় জনগণের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্ষমতাশালী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কীকরণ ছিল। সিরিয়ার নতুন নেতা হিসেবে আল-জোলানির কথা দেশটির ভবিষ্যৎ এবং পুরো অঞ্চলের জন্য নতুন পথের সূচনা হতে পারে।