প্রেম নিয়ে খুবই প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত একটি লাইন নিশ্চয়ই শুনেছেন? সেটি হচ্ছে ‘প্রেম অন্ধ’। অর্থ্যাৎ যখন একজন মানুষ সত্যিকারের প্রেমে পড়ে, তখন সে তার সঙ্গী বেছে নেয় শুধুমাত্র বিশুদ্ধ ভালোবাসার ভিত্তিতে। চেহারা, বয়স, ধর্ম এবং বর্ণের মতো সামাজিক বাধা এবং সংজ্ঞার বাছবিচার না করেই।
প্রেমের এই বিখ্যাত লাইনটিরই যেন বাস্তব প্রতিফলন ঘটালেন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক দম্পতি। এই দম্পতি সব সামাজিক রীতিনীতি ভেঙে জীবনের শেষ সময় এসেও বিয়ে করেছেন তাদের প্রিয় মানুষকে। আর এই বিয়েটাই ওই দম্পতিকে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে দিয়েছে।
কেননা, বিয়ের সময় বরের বয়স ১০০ বছর এবং কনের বয়স ১০২ বছর। পাত্র-পাত্রীর নাম বার্নি লিটম্যান এবং মার্জরি ফিটারম্যান। এর আগে এত বয়স্ক কোনো দম্পতিই বিয়ে করেননি।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বিবাহিত দম্পতি, বার্নি লিটম্যান এবং মার্জরি ফুটারম্যানের মোট বয়স ২০২ বছর, যা নিজেই একটি বড়সড় রেকর্ড। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে— তারা দুজনেই পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছিলেন, কিন্তু ছাত্রজীবনে তাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হয়নি। পেশাগত জীবনে, বার্নি একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং মার্জরি পেশায় একজন শিক্ষিকা ছিলেন।
কীভাবে প্রেমে পড়লেন তারা
তাদের বিয়ে ৩ ডিসেম্বর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছে। প্রায় দশ বছর আগে তাদের দেখা হয়েছিল একটি সিনিয়র সিটিজেন সেন্টারে। এদিন সেন্টারে একটি কস্টিউম পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানেই দেখা হওয়ার পর দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং প্রায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতেন তারা। প্রায় দশ বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের পর, সম্প্রতি তারা বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরপর কেন্দ্রের পরিচালক ও পরিবারের সদস্যরা তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পরিবার, পরিজনদের উপস্থিতিতে বিয়ে করেন ২০২৪ সালের মে মাসে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন গণমাধ্যমের মতে, বার্নি এবং মার্জরি উভয়েই একটি সুন্দর জীবন, ভরাট সংসার ফেলে এসেছেন। এর আগেও তারা বিয়ে করেছিলেন। তাদের সঙ্গীরা মারা যান। সন্তানও রয়েছে। যদিও সন্তানরা এখন আলাদা থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে, বার্নির নাতনি সারাহ সিকারম্যান বলেছেন, তিনি তাদের সম্পর্ক নিয়ে খুব খুশি।
তিনি বলেছিলেন, বর্তমান জীবনে এত দুঃখ এবং ভয় যে কারও সঙ্গ খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে কারও জীবনের শেষ মুহুর্তে এটি একটি বিশেষ অনুভূতিও এনে দেয়।