সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ গেটলক সার্ভিস পুনরায় চালুর লক্ষ্যে মতবিনিময়
মালিক সমিতির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ গেটলক সার্ভিস পুনরায় চালুর লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১২টায় সুন্দরবন প্রেসক্লাবের হলরুমে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কালিগঞ্জ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রউফ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, কালিগঞ্জ মালিক সমিতির জয়েন্ট সেক্রেটারি তপন কাজী, ক্যাশিয়ার মোঃ রুহুল আমিন গাজী, কালিগঞ্জ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুমন, সাধারণ সম্পাদক তাহের, সাতক্ষীরা জেলা বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন সরদার ও সজল বাবু, সহসাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, শাহিন হোসেন প্রমুখ।
সভায় বলা হয়, গেটলক সার্ভিস চালু না থাকায় সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছে। বিগত সময়ে চালু হওয়া গেটলক সার্ভিস বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা পুনরায় যাত্রী সেবার কথা মাথায় রেখে সার্ভিসটি চালু করতে যাচ্ছি। সাতক্ষীরা ও কালিগঞ্জ বাস মালিক সমিতি গেটলক সার্ভিস পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছেন।
সভায় জানানো হয়, আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সাতক্ষীরায় সবাই একত্রে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ গেটলক সার্ভিস। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাতক্ষীরা-দেবহাটা-কালিগঞ্জ-শ্যামনগরসহ এই রুটে চলাচলকারী লাখো মানুষ। বাস মালিক সমিতির নেতারা ও সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এই রুটে চালু হয়নি গেটলক সার্ভিস।
জানা যায়, জেলা শহরের সাথে শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, দেবহাটা উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক। ১৯৯৬ সালে শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকাসহ কালিগঞ্জ ও দেবহাটার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার কথা মাথায় রেখে মুন্সিগঞ্জ-খুলনা রুটে গেটলক সার্ভিস চালু করা হয়। সার্ভিসটি অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যা চলে টানা ২০১৩ সাল পর্যন্ত। কিন্তু লোকাল বাস মালিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মারাত্মক আকার ধারণ করায় সার্ভিসটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে মালিক সমিতি, প্রশাসন ও কয়েকজন সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে মুন্সিগঞ্জ-সাতক্ষীরা গেটলক সার্ভিস পুনরায় চালু। যা ২০১৫ সাল যেতে না যেতেই আবারো বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় চালু করা হলেও এক সপ্তাহের মধ্যেই মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে সেটা বন্ধ হয়ে যায়।
সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, পর্যটকসহ লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। শ্যামনগরের মানুষকে প্রতিদিন দুইবার বাস পরিবর্তন করে জেলা শহরে আসত হয়। এতে পথেই দিন কেটে যায় মানুষের।
অথচ যখন মুন্সিগঞ্জ-খুলনা গেটলক সার্ভিস চালু ছিলো তখন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আধা ঘণ্টা পরপর ও দুপুরের পর থেকে ১ ঘণ্টা পর পর বাস চলাচল করতো। খুুলনা-মুন্সীগঞ্জ গেটলক সার্ভিসের সময় নির্ধারণ করা ছিল মাত্র চার ঘণ্টা। জনপ্রিয় এই সার্ভিসটি চালু হওয়ার কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অনেক।
আপনার মতামত লিখুন