খুঁজুন
শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪০ কোটির মধ্যে ৩০ কোটি বই ছাপানো বাকি

সুন্দরবন নিউজ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
৪০ কোটির মধ্যে ৩০ কোটি বই  ছাপানো বাকি

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ ও পাঠদান শুরু করতে অপেক্ষায় আছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী। অথচ এখনো অধিকাংশ বই ছাপানো বাকি রয়েছে। এবার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি বিনামূল্যের বই ছাপানোর কথা রয়েছে। এতে সব মিলিয়ে ১০ কোটি বই ছাপানোর কাজ শেষ হলেও আরও ৩০ কোটি বই ছাপানো বাকি রয়েছে। ফলে বছরের শুরুতেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বই হাতে পাবে না। এদিকে খরচ সাশ্রয় করতে এবার বই উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

মুদ্রণসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত এ সময় নতুন শিক্ষাবর্ষের সব বই ছাপানো শেষ হয়ে থাকে। সেখানে বেশকিছু শ্রেণির বই ছাপা শুরুই হয়নি। এছাড়া বই ছাপানোর জন্য বাজারে পর্যাপ্ত কাগজের সরবরাহ নেই। কাগজ মালিকরা একধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। বছরের শুরুতে কিছু বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানো সম্ভব হলেও সব বই ছাপা শেষ হতে মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। ফলে জানুয়ারির শুরুতেই সব শ্রেণিতে বই দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, এনসিটিবির সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। বই বিতরণ যত দেরি হবে, শিক্ষার্থীদের তত ক্ষতি হবে। শুরু থেকে নীতিনির্ধারকরা একধরনের সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। শিক্ষাক্রম আগে নাকি পাঠ্যপুস্তক আগে, সেটি ঠিক করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। শিক্ষাক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও আমরা ফিরে গিয়েছি আগের কারিকুলামে। এতে বিশ্ব এগিয়ে গেলেও আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একধরনে মানসিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। তারা একধরনের ট্রমার মধ্যে সময় পার করছেন। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সময় হলেও সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই যথাসময়ে দিতে না পারলে তাদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে আকৃষ্ট করতে হবে। পড়াশোনার অংশ হিসাবে তাদের এসব কার্যক্রমে অভ্যস্ত করাতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবক সমাবেশ করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে তিন মাস দেরিতে শুরু হয় নতুন শিক্ষাবর্ষের বইয়ের কার্যক্রম। এরপর শিক্ষা কারিকুলামে আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে এবার পাঠ্যপুস্তকে স্থান পেয়েছে ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল কারিকুলাম। এতে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হলেও ১৩ দিনের মাথায় সেটি বাতিল করা হয়। এছাড়া এনসিটিবির বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সব সদস্য নতুন হওয়ায় এসব কার্যক্রম ছিল ধীরগতি। এতেও বেশ সময়ক্ষেপণ হয়েছে। এছাড়া পরিমার্জন ও সংশোধন কমিটি নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। এবার প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে জাতীয় সংগীত ও পতাকা ছাপানো হয় বইয়ের শেষে। এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। সবকিছু মিলে একধরনের হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। সামনে যে কয়দিন সময় আছে, এর মধ্যে ৩০ কোটির মতো পাঠ্যবই ছাপানোর সক্ষমতা দেশের মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের নেই। এছাড়া এ সময়ে চাহিদামতো মানের এত কাগজ পাওয়া নিয়েও কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের ছাপানোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চতুর্থ আর পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানো শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির প্রথমে তিনটি (বাংলা, গণিত ও ইংরেজি) বই ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো বেশির ভাগ ছাপানো বাকি রয়েছে। এছাড়া নবম ও দশম শ্রেণির সব বইয়ের ছাপানো চুক্তি শেষ করে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাণ্ডুলিপি দেবে এনসিটিবি। এরপর ছাপানোর কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে বই না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। বই হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের খেলাধুলা ও কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস নিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে। যদি শিক্ষার্থীদের বই পেতে খুব দেরি হয়, সেক্ষেত্রে সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত করতে হবে। পাশাপাশি তাদের হাইজেনিক বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও ক্ষতি কমে আসবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, বছরের শুরুতেই প্রাথমিকের পর্যায়ে প্রত্যেক শ্রেণিতে সব বই দেওয়ার চেষ্টা করছি। মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রত্যেক শ্রেণিতে তিনটি করে বই দেওয়ার কাজ চলছে। পাশাপাশি যেসব শ্রেণির ছাপানো চুক্তি বাকি রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। এছাড়া যেসব বইয়ের পরিমার্জন ও সংশোধন রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত দেওয়া হবে। যথাসময়ে এ কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী সব বই কবে হাতে পাবে, এ বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সব শ্রেণির সব বই দেওয়া সম্ভব না হলেও শিক্ষার্থীদের কিছু বই দেওয়া হবে। তাছাড়া কাগজ সংকট নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো সত্য নয়। নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর জন্য প্রেস মালিকরা এসব অভিযোগ তুলছেন।

আগামী শিক্ষাবর্ষের নতুন বইয়ের কাগজের ওজন ৭০ গ্রাম থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮০ গ্রাম। আর উজ্জ্বলতা ৮০ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৮৫ শতাংশ। নতুন বছরের জন্য শুরু থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪০ কোটি নতুন বই ছাপানো হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী বইয়ের মান ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়ে একধরনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, বইয়ের কাগজের মান নিয়ে আমরা সচেতন। কোনো মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনসিটিবি কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৩ শিক্ষার্থীর জন্য ৯৬৪ লটে ছাপা হবে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই। এর মধ্যে প্রাথমিকের ২ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫ কপি বই। অন্যদিকে মাধ্যমিকের ২ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। এর মধ্যে ইবতেদায়ি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বইও যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ব্রেইল বই রয়েছে সাড়ে ৮ হাজার।

এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজে দেরি, নতুন কনটেন্ট যুক্ত হওয়া, বইয়ের কাভারে ব্যবহারের জন্য গ্রাফিতি নির্বাচনসহ বিভিন্ন কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিকের সব বই ছাপার কাজ শেষ হচ্ছে না। বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা যাতে কিছু বই হাতে পায়, সেই চেষ্টা করছে এনসিটিবি। সেজন্য ষষ্ঠ থেকে দশম-প্রত্যেক শ্রেণির তিনটি বই আগে ছাপানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান যুগান্তরকে বলেন, এখনো নবম-দশম শ্রেণির সব বই ছাপানোর চুক্তি শেষ হয়নি। এসব শ্রেণির কেবল নোহা পেয়েছে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এনসিটিবি ওয়ার্ক অর্ডার ঠিক না করে ডেলিভারির সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে, যেটি অযৌক্তিক। এছাড়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছবি ছাপানো নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তবে আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। এদিকে পেপার মিলগুলো সিন্ডিকেট করে কাগজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি টন কাগজে ২০ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। আর্ট কার্ডে প্রতি টনে ৪০ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। এতে এনসিটিবির উৎপাদন শাখার কোনো তৎপরতা নেই। এ বিষয়ে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।

শ্যামনগরে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্য রাশিদুল গ্রেপ্তার

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ
শ্যামনগরে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্য রাশিদুল গ্রেপ্তার

আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্য রাশিদুল ইসলাম (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চুনা ব্রিজ এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়।

শ্যামনগর-সাতক্ষীরা-যশোর এলাকার মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট বাক্কার বাহিনীর দ্বিতীয় প্রধান রাশিদুল উপজেলার বংশীপুর গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে।

এসময় তার নিকট থেকে একটি চোরাই ডিসকভার ১২৫ সিসির মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবীর মোল্লা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদর থেকে একটি মোটর সাইকেল চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতা তাকে আটক করে। জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে চুনার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছে মোটর সাইকেলটি বন্ধ হলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। পরে মোটর সাইকেল মালিক মোহাম্মদ আলীর দায়েরকৃত চুরির মামলায় শুক্রবার সকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত রাশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনার ও সিরাজগঞ্জে মোটরসাইকেল চুরির ১০টি মামলা রয়েছে। জামিন নিয়ে বাইরে এসে রাশিদুল ও তার লোকজন একই অপকর্মে জড়িত হয় বলেও তিনি জানান।

আজহারীকে বরণ করতে বিছানো হয়েছে লাল গালিচা

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:২০ অপরাহ্ণ
আজহারীকে বরণ করতে বিছানো হয়েছে লাল গালিচা

যেদিকেই চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। সূচি অনুযায়ী, বয়ান দেওয়ার জন্য রাত ৮টায় মঞ্চে ওঠার কথা মিজানুর রহমান আজহারীর। তবে দুপুর থেকেই কানায় কানায় ভরে গেছে গোটা মাহফিল এলাকা। যদিও সকাল থেকেই আসতে শুরু করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তাকে বরণ করতে বিছানো হয়েছে লাল গালিচা।

তাফসির ময়দানস্থলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আয়োজক কমিটি ও প্রশাসন। জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী আজ রাত ৮টার দিকে হেলিকপ্টারে চড়ে পেকুয়া আসার কথা রয়েছে এবং তিনি রাত ১০টায় আলোচনা করবেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মিজানুর রহমান আজহারীকে মাহফিল করতে না দেওয়া ও দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথম ঢাকার বাইরে মাহফিল হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে পেকুয়ার ওয়াজ মাহফিলে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের জমায়েত হয়েছে।

মাহফিল কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিজানুর রহমান আজহারী ছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তাগণ বক্তব্য রাখবেন।

ইতোমধ্যে কক্সবাজারে নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনে জেলা পুলিশের ১০০ সদস্যের বিশেষ টিম পেকুয়ায় অবস্থান করছে। মাহফিলে আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের এ বিশেষ টিম কাজ করছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকে বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, পেকুয়ায় বাংলাদেশের আলোচিত ও জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। অনেক লোক জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা পুলিশের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে পেকুয়া থানা পুলিশের বিশেষ টিম মাঠে রয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশের সহযোগিতায় ১০০ সদস্যদের পুলিশের বিশেষ টিম পেকুয়ায় কাজে নেমে পড়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনা বাহিনী, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যরা মাঠে রয়েছে, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এদিকে ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী দেশে এসেই তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে স্ট্যাটাস শেয়ার করে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, নিরাপদে দেশে এসে পৌঁছালাম।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মারা গেছেন

সুন্দরবন নিউজ২৪ /ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৪০ পূর্বাহ্ণ
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মারা গেছেন

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ড. মনমোহন সিং ৯২ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৫১ মিনিটে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (এআইআইএমএস) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে চেতনা হারান মনমোহন সিং। শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে রাত ৮টার দিকে তাকে এআইআইএমএসের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। গুরুতর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাকে তৎক্ষণাৎ আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তবে চিকিৎসকদের চেষ্টার পরও তার চেতনা ফেরানো সম্ভব হয়নি। রাত ৯টা ৫১ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মনমোহন সিং বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এর আগে, তিনি বেশ কয়েকটি গুরুতর শারীরিক সমস্যা মোকাবিলা করেছিলেন।

শৈশব ও শিক্ষা

১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত পাঞ্জাবের গাহ্ গ্রামে এক শিখ পরিবারে জন্ম নেন মনমোহন সিং। বর্তমান পাকিস্তানের অংশ হওয়া সেই গ্রামে শৈশব কাটালেও দেশভাগের পর তার পরিবার ভারতের অমৃতসরে চলে আসে। ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে ঠাকুমার কাছে বড় হন তিনি। প্রথমে উর্দু মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে পাঞ্জাবি ও গুরুমুখী ভাষাতেও দক্ষতা অর্জন করেন।

রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবন

১৯৭১ সালে ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে মনমোহন সিংয়ের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে ভারত অর্থনৈতিক সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে আরও দৃঢ়ভাবে যুক্ত হয়।

২০০৪ সালে কংগ্রেস জোটের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিং ভারতের ১৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। দুই মেয়াদে (২০০৪-২০১৪) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভারতের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছায়। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি এবং বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প তার শাসনামলের উল্লেখযোগ্য অর্জন।

শেষ অধ্যায়

চলতি বছরের শুরুর দিকে রাজ্যসভা থেকে অবসর নেন মনমোহন সিং। এর আগে, ২০০৯ সালে তার সফল করোনারি বাইপাস সার্জারি সম্পন্ন হয় এবং ২০২১ সালে তিনি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হন। তবে এসব শারীরিক সমস্যা কাটিয়ে তিনি দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন।

শোকের ছায়া

মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

স্মরণীয় অবদান

ড. মনমোহন সিং তার সততা, নীতিবোধ এবং দক্ষ নেতৃত্বের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার নেতৃত্বে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও কূটনৈতিক সাফল্য দেশের ইতিহাসে নতুন দিক উন্মোচন করেছে।

এই মহান নেতার প্রয়াণে ভারতীয় রাজনীতিতে এক শূন্যতা তৈরি হলো, যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।