খুঁজুন
শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের সঙ্গে বিরোধ, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বিএনপি

সুন্দরবন নিউজ২৪ /ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৩০ অপরাহ্ণ
জামায়াতের সঙ্গে বিরোধ, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বিএনপি

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকারের সঙ্গে রাজনীতির ময়দান থেকে বিদায় নিতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। বিদ্যমান এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের মিত্র থেকে বিপরীত দুই মেরুতে পৌঁছেছে বিএনপি ও জামায়াত।

নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে দুটি দলের মধ্যে বিরোধ ক্রমেই বাড়ছে।

এই মুহূর্তে অন্যতম দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বাড়তে পারে জটিলতা। আবার বিএনপি নেতাদের শঙ্কা— দেশে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন ও সংস্কার বাস্তবায়ন নির্ভর করবে সরকারের আন্তরিকতা ও দৃঢ়তার ওপর।

বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কার ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না। অন্যদিকে জামায়াতের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। দলটি সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায় না। আবার জাতীয় নির্বাচনের আগে চায় স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জামায়াতের সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতিরও পুরোপুরি বিপরীত অবস্থানে বিএনপি।

অতীতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করা দুই রাজনৈতিক মিত্র নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েও বিরোধে নেমেছে। বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন চায়। দলটি বলছে, নির্বাচিত সরকার এসে সংস্কার করবে। অন্যদিকে জামায়াত নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার চায় এবং সংস্কার বাস্তবায়নে নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চায়।

এদিকে বিএনপি নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, দেশে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে ‘টালবাহানা’ শুরু হয়েছে— এমন অভিযোগ এনে নেতারা দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করছেন বিএনপির অনেক নেতা।
নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ যেখানে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা (নির্বাচন কমিশনকে) পরিষ্কার বলেছি ‘নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস (সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়)। ’

সংস্কারের জন্য জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের আগে সময় দিতে প্রস্তুত জানিয়ে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘নির্বাচন নিরপেক্ষ করার জন্য যে সংস্কার ন্যূনতম প্রয়োজন, তার জন্য যতটা যৌক্তিক সময় প্রয়োজন হবে, জামায়াতে ইসলামী সেই সময়টা দিতে প্রস্তুত। ’

জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মাস আমাদের কাছে কোনো ফ্যাক্টর নয়, সংস্কারটা পূর্ণ করে নির্বাচন ফেয়ার করার জন্য যে কয়েক মাসই লাগুক, আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা পুরো রাষ্ট্রের সংস্কারের কথা বলিনি। তা করতে গেলে অনেক সময় লাগবে। অন্তত নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত, সেগুলোর সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে এই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না, অবাধ হবে না। ’

একইদিন বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই রাজনীতি সহজ হবে। বাংলাদেশ স্থিতিশীল হয়ে আসবে। ’

দ্রুত জাতীয় নির্বাচন কেন জরুরি— সেই ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনটা হওয়া দরকার, এর প্রধান দুটি কারণ আছে, একটি হলো স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, আরেকটি হলো গভর্ন্যান্স (সুশাসন) চালু করা। এখন তো গভর্ন্যান্সে খুব সমস্যা হচ্ছে, এটি কার্যকর করলেই তখন দেখবেন অর্থনীতি ভালো হয়ে আসছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। নির্বাচিত সরকার না হলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। ’

জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়— জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষাই হলো— স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক। আমরা জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন এবং সম্মান করি। ’

জাতীয় নির্বাচনের আগে জামায়াতের স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এটাতেও আমরা একেবারেই একমত নই। এটা দেশকে আরও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাওয়ারপরিকল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। ’

এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনকে জামায়াত সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল বলেছিলেন, ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে ৬০টিরও বেশি দেশে এ ব্যবস্থা রয়েছে। ’

জামায়াতের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির অবস্থান বিষয়ে বলেন, ‘এটাতে আমরা পুরোপুরি বিরোধী। জোরোলোভাবে বিরোধী। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থাকে আমরা সমর্থন করব না। কারণ এখানকার মানুষ এতে অভ্যস্ত নয়। এরকম ভোটের প্রশ্নই উঠতে পারে না। ’

বিএনপির সঙ্গে ভিন্ন অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে নানা ইস্যুতে ভিন্নমত থাকতেই পারে। এ নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। আমরা একটা মত দিয়েছি, অন্য দলের ভিন্নমত থাকতেই পারে। এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। ’

সবশেষ ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা আশা করি খুব দ্রুততম সময় সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, আগে জাতীয় নির্বাচন, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। ’

একই দিন ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি যে সংস্কার প্রয়োজন। সেই সংস্কারে আমরা ঐকমত্য হই, তারপর যথাশিগগির সম্ভব নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা তো বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ওনারা করবেন। আমরা সেটা দেখছি। ’

বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে ‘আশঙ্কা’

‘যত দ্রুত নির্বাচন হবে, ততই রাজনীতি সহজ হবে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল হয়ে আসবে’— মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্য ছাড়াও দ্রুত নির্বাচন নিয়ে নিয়মিত কথা বলছেন দলের অন্য শীর্ষ নেতারা।

কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়াপল্টনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা ডিসেম্বরের ঘোষণা দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। আমরা সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ’

কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আরে ভাই, আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি এবং আমাদের জোট নির্বাচনে গিয়েছিল, ফলে বাংলাদেশের অনেক নামিদামি, অনেক বিখ্যাত-প্রখ্যাত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে। ওই রকম ভুল আর করবেন না দয়া করে। একটি ভুল লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করবেন না। ’

সবশেষ ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ‘রোড টু ইলেকশন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রথম হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে একটা সরকারের পরিবর্তন হয়। সেই মূল কাজটা বাদ দিয়ে আমরা যদি সাবসিডিয়ারি কাজ শুরু করে দিই, তাহলে এটা খুব একটা গ্রহণযোগ্য হবে না। এটা হতে পারে না। ’

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর হাসিনার কাছে মাথানত করেনি। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলেও আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথানত করব না। ’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে। কেউ মনে হয় একটু যেন গোলমাল করে ফেলছে। কোথায় যেন একটা কীসের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ’

বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ ইস্যুতে কী বলছেন বিশ্লেষকরা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কোন দল কতটা চাপ দিচ্ছে, এ বিবেচনায় যদি অন্তর্বর্তী সরকার কোনো নির্দিষ্ট দলকে প্রাধান্য না দেয়, তাহলে নির্বাচন ও সংস্কার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। আর রাজনৈতিক মাঠে যেহেতু বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া তৃতীয় আর কোনো বড় শক্তি নেই, সেহেতু তাদের মধ্যে বিরোধ হবে, এটাই রাজনীতির ধর্ম। এক্ষেত্রে দল দুটি যদি গঠনমূলক রাজনৈতিক চর্চা করে, তবেই তা দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে।

দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার বিরোধ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবসময় মিত্রতা থাকে না। তাহলে রাজনীতি হয় না। একটা রাজনৈতিক দলের একটা স্বতস্ত্র রাজনীতি থাকবে, রাজনৈতিক পরিচয় থাকবে। সে তার প্রয়োজন মতো রাজনীতি করবে। প্রয়োজনে অন্য দলের সঙ্গে সে মিত্রতা করবে। সেটা হয়, সারা দুনিয়াতেই হচ্ছে। কোয়ালিশন রাজনীতি হয়, অ্যালায়েন্স পলিটিক্স হয়। আবার সেই অ্যালায়েন্স ভেঙেও যায়।

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে— বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেই দল (বিএনপি) হয়তো কোন হিন্টস (ইঙ্গিত) পেয়েছে (নির্বাচন) পিছিয়ে যাওয়ার।

নির্বাচন পেছানোর ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ কী ধরনের প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাব্বির আহমেদ বলেন, এটা কোনো প্রভাব ফেলবে না। সিদ্ধান্ত নেবে তো সরকার। কোন তারিখে নির্বাচন হবে, সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। সেখানে আমি কোনো সমস্যা দেখি না। এটি সরকারকে চাপে রাখার কৌশলও হতে পারে।
এখন পর্যন্ত দেশে নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র দেখছেন না বলেও মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।

পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:১২ অপরাহ্ণ
পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আজ থেকে শুরু হল।

৭ই এপ্রিল সোমবার সকাল ১১ টায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আয়োজনে বুড়িগোয়ালিনী ৭১নং ফরেস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, নৌ পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মী, এনজিও সহ সর্বোপরি মৌয়ালদের নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও ) এ  জেড এম হাছানুর রহমানের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিভিন্ন এনজিও
প্রতিনিধিগণ,জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবক এবং গণমাধ্যম কর্মী।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হাছানুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩৬৪ পাশে ২৪৭১ মাধ্যমে ১২৩৫.৫০ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয় ও ৩৭০.৬৫ কুইন্টাল মোম সংগ্রহ হয়। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয় ২৭,৯২,২৩০ টাকা। ২০২৫ সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩৭ টা মধুর পাশ হয়েছে।


প্রসঙ্গতঃ বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাস নিয়ে ১ এপ্রিল সকাল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে এবার মধু আহরণ মৌসুমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো আজ ৭ এপ্রিল।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, মধু আহরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু না হলেও ১ এপ্রিল সকালে মধু সংগ্রহে চারটি নৌকায় বেশ কয়েকজন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বনজীবী মৌয়ালদের হাতে পাশ উঠিয়ে দেন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য মতে, চলতি ২০২৫ মৌসুমে সরকারিভাবে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেড় হাজার কুইন্টাল ও মোমের লক্ষ্য মাত্রা ৪০০ কুইন্টাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এক এপ্রিল বুড়িগোয়ালিনী ও কোবাদক স্টেশন থেকে ৯টি পাশ সংগ্রহ করেছে মৌয়ালরা। এর মধ্যে সকালে চারটি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশ করে।

মৌয়াল ফজলুল হক বলেন, ‘ঈদের পর আনন্দের সঙ্গে আশা নিয়ে সুন্দরবনে যাচ্ছি মধু আহরণের জন্য। কিন্তু মৌসুম শুরুর আগে অবৈধভাবে সুন্দরবন থেকে যে হারে মধু চুরি হয়েছে, জানি না আশানুরূপ মধু পাবো কিনা। অল্প জায়গায় মধু আহরণ করে আমাদের পরিবার পরিজনের ভরণপোষণ ও মহাজনের চালান উঠানো কঠিন।
আগামী দিনে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যগুলোতেও মধু আহরণের অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

মৌয়াল ফজলুল হকের মতে, যে পরিমাণ মৌয়াল সুন্দরবনে যান তাদের জন্য মধু আহরণের এলাকা পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া অভয়ারণ্য থেকে মধু আহরণ না করার ফলে মধুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ণ
বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধিও লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিআরপি কেন্দ্রীয় কমিটির দলীয় প্যাডে কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক মোঃ সোহেল রানা এবং সদস্য সচিব মোঃ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার কমিটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা কমিটিতে স্থপতি মোঃ আরিফ হোসেন লিমন কে আহবায়ক এবং জুলফিকার আলী কে সদস্য সচিব মনোনীত করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন যথাক্রমে ফেরদৌস আলম শাকিল, মোঃ আশিক ইকবাল, মোঃ সোহাগ, তামিম তানভীর, নয়ন খান, মোঃ আবু হানিফ। এছাড়া যুগ্ম সদস্য সচিব পদে রয়েছেন যথাক্রমে আবু হাসান, তানভীর রাইহান খান, মোঃ মারুফ বিল্লাহ, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু এবং মোঃ জুবায়ের হোসেন। জেলা কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন এম. আব্দুর রহিম, সর্দার আসিফুর রহমান, কাজী আব্দুস সালাম, মোঃ আসিফ ইসলাম, নাঈম আহমেদ, নাহিদ পারভেজ, মোঃ সরিফুল ইসলাম, মোঃ মিনহাজুল আবেদিন, মোঃ রোকনুজ্জামান, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু, রাসেল আহমেদ, মোঃ ইসরাফিল বাবু, মোঃ শরিফুল ইসলাম, সাবিলার রহমান, রাকিমুন ইসলাম ও কাজী মোঃ আব্দুল ইরফান।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সাতক্ষীরা জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। দলের মূলনীতি, লক্ষ্য এবং কর্ম পরিকল্পনা সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা আজ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করছি।

এই কমিটি দলের সংগঠন, সম্প্রসারণ ও কর্ম কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবে। দলীয় সদস্য ও দেশবাসীর প্রতি আমাদের অঙ্গীকার রইল, যে আমরা জনগণের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।

আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়ার বাধ ভে‌ঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লা‌বিত

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৩ অপরাহ্ণ
আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়ার বাধ ভে‌ঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লা‌বিত

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়া নদীর বে‌ড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লা‌বিত হ‌য়ে‌ছে। ভে‌সে গে‌ছে হাজার হাজার বিঘার মৎস‌্য ঘের। এতে গ্রামবাসীর ঈদ আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়েছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে আমরা ঈদের নামাজ আদায়ে ব্যস্ত ছিলাম। নামাজ শেষে জানতে পারলাম আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে ধ‌সে প‌ড়ে‌ছে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার দিয়ে দ্রুত লোকজনকে ভাঙ্গন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের চেষ্টা ক‌রে। দীর্ঘ সা‌ড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা ক‌রেও শেষ রক্ষা হয়‌নি। সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে প্রবল জোয়া‌রের তো‌ড়ে বা‌ধের অব‌শিষ্টাংশ ভে‌ঙে গি‌য়ে লোকাল‌য়ে পা‌নি ঢুক‌তে শুরু ক‌রে।

স্থানীয়রা জানান, ইতোম‌ধ্যে বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, আনু‌লিয়াসহ আশপা‌শের আরও ৬টি গ্রা‌মে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। এসব গ্রা‌মের বা‌ড়ি ঘ‌রে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। মৎস‌্য খামার ভে‌সে গে‌ছে। দ্রুততম সম‌য়ে বাধ বাধ‌তে না পার‌লে পার্শ্ববর্তী খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নও প্লা‌বিত হ‌তে পা‌রে।

স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে সম্পূর্ণ খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে হ‌য়ে‌ছে। পাউবোর লোকজন ছু‌টি‌তে। তারা ফেরার চেষ্টা কর‌ছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদেরকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হ‌চ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।