খুঁজুন
সোমবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা পরিকল্পনায় কী আছে

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:০৮ অপরাহ্ণ
গাজায় ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা পরিকল্পনায় কী আছে

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে ঐতিহাসিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। এই পরিকল্পনা নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। এই পরিকল্পনায় আছে ২০ দফা প্রস্তাব। বলা হয়েছে, এই প্রস্তাব মেনে নিলে ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে। হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছে, যদি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস প্রস্তাব মেনে নেয়, তবে যুদ্ধ মুহূর্তের মধ্যেই থেমে যাবে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা মেনে নিয়েছেন। তবে হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাভি বলেছেন, তারা গাজার জন্য কোনো লিখিত শান্তি পরিকল্পনা পাননি।

২০ দফা পরিকল্পনায় কি আছে তা এখানে তুলে ধরা হলো-

১. গাজাকে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চলে পরিণত করা হবে।

২. গাজাকে পুনর্গঠন করা হবে।

৩. উভয় পক্ষ প্রস্তাবে রাজি হলে যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে। ইসরাইলি বাহিনী জিম্মি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে। এ সময় সব সামরিক অভিযান-বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ বন্ধ থাকবে। যুদ্ধক্ষেত্রের সীমারেখা স্থির থাকবে, যতক্ষণ না ধাপে ধাপে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের শর্ত পূরণ হয়। অর্থাৎ, দুপক্ষই তাদের জায়গা বদলাবে না। সব শর্ত যেমন, জিম্মি ও বন্দীমুক্তি, নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক করা ইত্যাদি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।

৪. ইসরাইল প্রকাশ্যে এই চুক্তি মেনে নেয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) ফিরিয়ে দেয়া হবে।

৫. সব জিম্মি ফেরত আসার পর ইসরাইল যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এর সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক করা ১ হাজার ৭০০ গাজাবাসীকেও মুক্তি দেবে।

৬. সব জিম্মি ফেরত আসার পর, হামাসের যেসব সদস্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি হবেন, তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। হামাসের যেসব সদস্য গাজা ছাড়তে চান, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে যেতে দেয়া হবে।

৭. চুক্তি মেনে নেয়ার পরই গাজায় পুরোপুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে। ন্যূনতম সহায়তা সেই মাত্রায় থাকবে, যা গত ১৯ জানুয়ারির মানবিক সহায়তা চুক্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এতে অবকাঠামো (পানি, বিদ্যুৎ, নর্দমা ব্যবস্থা), হাসপাতাল, বেকারি মেরামত এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে রাস্তা খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৮. জাতিসংঘ ও এর সংস্থাগুলো, রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা কোনো পক্ষের সঙ্গে যুক্ত নয়, তারা গাজায় সহায়তা সরবরাহ ও বিতরণ করবে। রাফাহ সীমান্ত দুই দিকে খোলার বিষয়টি ১৯ জানুয়ারির চুক্তির অধীনে একই ব্যবস্থায় চলবে। অর্থাৎ, সীমান্ত খোলা ও বন্ধ হবে পুরোনো চুক্তির নিয়মে, দুপক্ষের সম্মতি ও তত্ত্বাবধানে।

৯. গাজার প্রশাসন সাময়িকভাবে একটি ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট কমিটির হাতে থাকবে। রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ এ কমিটি গাজার মানুষের জন্য দৈনন্দিন সেবা পরিচালনা করবে। কমিটিতে যোগ্য ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ থাকবেন। তাদের তত্ত্বাবধান করবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা- ‘বোর্ড অব পিস’। এর প্রধান থাকবেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সংস্থার সদস্য হিসেবে সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে। এ সংস্থা গাজা পুনর্গঠনের জন্য অর্থ ও কাঠামো ঠিক করবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) সংস্কারপ্রক্রিয়া শেষ করে আবারও কার্যকরভাবে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত সংস্থা কাজ চালাবে। সংস্থাটির লক্ষ্য হবে গাজায় আধুনিক, কার্যকর ও বিনিয়োগবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা। সব জিম্মি ফেরত আসার পর ইসরাইল যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এর সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক করা ১ হাজার ৭০০ গাজাবাসীকেও মুক্তি দেবে। এতে ওই সময় আটক সব নারী ও শিশুও থাকবে। প্রত্যেক ইসরাইলি জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরাইল ১৫ জন গাজাবাসীর মরদেহ ফিরিয়ে দেবে।

১০. অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সফল আধুনিক শহরের পরিকল্পনায় কাজ করা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গাজা পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিনিয়োগ-প্রস্তাব ও উন্নয়ন-পরিকল্পনা বিবেচনা করা হবে; যাতে কর্মসংস্থান, সুযোগ ও ভবিষ্যতের আশা তৈরি হয়।

১১. গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক ও প্রবেশাধিকারের বিষয়ে আলোচনা হবে।

১২. কাউকে গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হবে না। যারা যেতে চাইবেন, যেতে পারবেন এবং ইচ্ছা করলে ফিরে আসতেও পারবেন। তবে মানুষকে গাজায় থাকতে উৎসাহ দেওয়া হবে; যাতে তাঁরা নতুন গাজা গড়ে তুলতে পারেন।

১৩. হামাস ও অন্যান্য সংগঠন প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ বা অন্য কোনোভাবে গাজার প্রশাসনে অংশ নেবে না। সব সামরিক অবকাঠামো- টানেল, অস্ত্র কারখানা ধ্বংস করা হবে এবং পুনর্নির্মাণের অনুমতি থাকবে না। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে। অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করে সরিয়ে ফেলা হবে। অস্ত্র জমা দেওয়ার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক তহবিল দিয়ে এটির ক্রয় কার্যক্রম চালানো হবে। নতুন গাজা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা নিশ্চয়তা দেবে যে, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী তাদের প্রতিশ্রুতি মানবে এবং নতুন গাজা প্রতিবেশী দেশ বা নিজের জনগণের জন্য হুমকি হবে না।

১৫. আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র গাজার জন্য একটি অস্থায়ী বাহিনী ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ গঠন করবে। এটি দ্রুত গাজায় মোতায়েন হবে। আইএসএফ গাজার জন্য বাছাই করা ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেবে এবং জর্ডান ও মিসরের সঙ্গে পরামর্শ করবে; যাদের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বাহিনী দীর্ঘমেয়াদে গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে। আইএসএফ ইসরাইল ও মিসরের সঙ্গে মিলে সীমান্ত সুরক্ষার কাজও করবে। মূল লক্ষ্য হবে, গাজায় অস্ত্র প্রবেশ ঠেকানো এবং দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে একটি সমন্বয়প্রক্রিয়ায় উভয়পক্ষ রাজি হবে।

১৬. ইসরাইল গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না। আইএসএফ স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করলে ইসরাইলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজা ছাড়বে। এ জন্য নিরস্ত্রীকরণের অগ্রগতি ও নির্ধারিত সময়সূচির ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা হবে। উদ্দেশ্য হবে এমন এক গাজা গড়ে তোলা, যা ইসরাইল, মিসর বা তাদের নাগরিকদের জন্য আর হুমকি হবে না। ইসরাইলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজার নিয়ন্ত্রণ আইএসএফের হাতে তুলে দেবে। পুরো সেনা সরানোর পরও শুধু নিরাপত্তা রক্ষায় সামান্য সৈন্য থাকবে; যতক্ষণ না গাজা পুরোপুরি নিরাপদ হয়।

১৭. যদি হামাস এ পরিকল্পনা মানতে দেরি করে বা মেনে না নেয়, তবুও ইসরাইল যে জায়গা ছাড়বে (যেগুলো ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ করা হয়েছে) সেই জায়গাগুলো আইএসএফের হাতে তুলে দেবে এবং ওই নিরাপদ এলাকায় সাহায্য ও পুনর্গঠনের কাজ চালু হবে।
১৮. গাজায় সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি আন্তধর্মীয় সংলাপ চালু হবে। এর লক্ষ্য হবে, ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বর্ণনা বদলানো; যাতে তারা শান্তির সুফল বুঝতে পারেন।

১৯. গাজা পুনর্গঠনের কাজ চলাকালে ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র গঠনে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এটাই ফিলিস্তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষা।

২০. যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংলাপ শুরু করবে; যাতে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সহাবস্থানের জন্য একটি রাজনৈতিক দিকনির্দেশনায় তারা একমত হতে পারে।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:৪৭ অপরাহ্ণ
বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

আজ ৫ অক্টোবর (রোববার), বিশ্ব শিক্ষক দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। এবছরের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘শিক্ষকতা পেশা : মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ বাংলাদেশেও এই দিবস উদযাপন হবে।

শিক্ষক ছাড়া জাতির অগ্রগতি অসম্ভব—সেজন্য ১৯৯৪ সাল থেকে ইউনেস্কোর উদ্যোগে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে এই দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ সভায় ৫ অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন শুরু হয়। ইউনেস্কোর অনুমোদনে প্রতিবছর পৃথক প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

একজন শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না, তিনি একজন শিক্ষার্থীর চিন্তা, চরিত্র ও ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শিক্ষকরাই জাতিকে আলোকিত পথে এগিয়ে নিয়ে যান এবং সমাজকে গড়ে তোলেন জ্ঞান ও নৈতিকতার ভিত্তিতে। তাই তাদের ভূমিকা জাতি গঠনের কারিগর হিসেবে অনন্য ও অপরিসীম। এই দিবসটি শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কাজকে মূল্যায়ন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষকরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করেন এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে অবদান রাখেন। শিক্ষকদের পেশাগত স্বাধীনতা, অধিকার এবং উন্নত বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশার প্রতি তরুণদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করা এই দিবসের অন্যতম তাৎপর্য।

দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান। শিক্ষক দিবস কেবল আনুষ্ঠানিকতার দিন নয়, এটি শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকার ও গুরুত্ব পুনরায় তুলে ধরার এক মূল্যবান মুহূর্ত।

দিবসি পালনের অংশ হিসেবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোববার সকালে গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১২ জন শিক্ষককে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৩৬ জন শিক্ষককে নির্বাচিত করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন বিশ্বদ্যিালয়, কলেজ, মাধ্যমিক, মাদরাসা, কারিগরি ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের বাছাই করা হয়।

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই শুরু হয় বিসর্জন।

এর আগে ণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। আরতি, শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিকাল থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেন তারা।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নবমী পূজার পর দেবী মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যান। তাই দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতার। দর্পণ বিসর্জনের পর রীতি অনুযায়ী, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীকে সিঁদুর, তেল, পান-চিনি নিবেদন করে ভক্তরা অশ্রুসজল নয়নে বিদায় জানান। বিসর্জনের মাধ্যমে আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা।

প্রতি বছরের মতো এবারও শ্যামনগরের খোলপেটুয়া নদীতে জেলার দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদী, খাল এবং স্থানীয় পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। দুপুর থেকে ট্রাক ও ভ্যানে করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় খোলপেটুয়া নদীতে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও বিসর্জন দেখতে হাজির হন হাজারো মানুষ। দ্বিতীয় টাকি খ্যাত বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীতে বিসর্জন কার্যক্রমের নিরাপত্তায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।

বিকেলে খোলপেটুয়া নদী তীরে গিয়ে বিসর্জন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্লা প্রমুখ।

এ বছর জেলার ৫৮৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তের ইছামতি নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হাজির হন দুই বাংলার হাজারো মানুষ। তবে, এবারো ইছামতিতে ভাসেনি মিলনমেলার তরী। নিজ নিজ সীমানার মধ্যে থেকেই প্রতিমা বিসর্জন দেন তারা।

এই ৩ ফলের রসে স্বাভাবিকভাবে বাড়বে সন্তানের উচ্চতা

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ
এই ৩ ফলের রসে স্বাভাবিকভাবে বাড়বে সন্তানের উচ্চতা

অনেক বাবা-মা মনে করেন, সন্তান হয়তো ঠিকমতো খাচ্ছে না বলেই উচ্চতা বাড়ছে না। আসলে শুধু খাওয়ার পরিমাণই নয়, কী ধরনের খাবার খাচ্ছে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের বৃদ্ধি (গ্রোথ) এবং উচ্চতা বাড়ানোর জন্য দরকার সঠিক পুষ্টি—যেমন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিনস, আয়রন ও খনিজ পদার্থ।

এমন কিছু ফল আছে যেগুলোর রসে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান শিশুদের হাড় মজবুত করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং স্বাভাবিকভাবে উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। নিচে এমন তিনটি ফলের রসের কথা বলা হলো, যেগুলো শিশুদের ডায়েটে যুক্ত করলে উপকার পেতে পারেন।

১. পেয়ারার রস

পেয়ারা শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এর রসও অনেক পুষ্টিকর। এতে থাকে:

ভিটামিন C – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ক্যালসিয়াম – হাড় মজবুত করে

ভিটামিন B ও ফাইবার – হজমে সাহায্য করে

শিশুরা যদি নিয়মিত পেয়ারার রস খায়, তবে তাদের হজমশক্তি ভালো থাকে, যা সরাসরি পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

টিপস: বাড়িতে টাটকা পেয়ারা ব্লেন্ড করে অল্প পানি ও মধু মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর জুস বানাতে পারেন।

২. স্ট্রবেরির রস

স্ট্রবেরি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, এর গুণও তেমন চমৎকার। এতে থাকে:

ভিটামিন C, আয়রন ও ক্যালসিয়াম

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট – শরীরের কোষকে সুস্থ রাখে

প্রোটিন – দেহের গঠন ও হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায়

স্ট্রবেরির রস শিশুদের হাড়কে শক্তিশালী করে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। নিয়মিত এই রস খাওয়ালে শিশুদের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলতে পারে।

টিপস: স্ট্রবেরির মৌসুমে টাটকা ফল দিয়ে রস তৈরি করুন, চাইলে দুধ বা কলাও মিশিয়ে দিতে পারেন।

৩. কলার শেক

কলার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুদের জন্য এক কথায় পারফেক্ট। এতে থাকে:

পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম – হাড় ও পেশিকে মজবুত করে

ভিটামিন B6 ও ফাইবার

প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম – দেহের গঠন ও গ্রোথে সহায়ক

প্রতিদিন এক গ্লাস কলার শেক খেলে শিশুদের শক্তি বাড়ে, হজম ভালো হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ হয়।

টিপস: দুধ, কলা, অল্প মধু এবং চাইলে সামান্য বাদাম দিয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর কলার শেক তৈরি করুন।

অতিরিক্ত কিছু পরামর্শ

শুধু ফলের রস খেলেই উচ্চতা বাড়বে না। এর সঙ্গে প্রয়োজন:

– সঠিক ঘুম – দিনে অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা

– নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা – যেমন সাঁতার, দড়ি লাফ, বাস্কেটবল

– পর্যাপ্ত পানি পান – শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে

– সঠিক খাবার – প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ও সবজি

উচ্চতা বৃদ্ধি একটি ধীর ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। সন্তানকে কখনোই জোর করে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। বরং ফলের রসের মতো পুষ্টিকর ও সুস্বাদু বিকল্প দিয়ে তাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

এই ৩টি ফলের রস তাদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় যুক্ত করলে ধীরে ধীরে আপনি ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।

মনে রাখবেন, সন্তান যদি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা কম উচ্চতার হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই একবার পেডিয়াট্রিশিয়ানের (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ) পরামর্শ নিন। কারণ এর পেছনে অন্য কোনো শারীরিক কারণও থাকতে পারে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস (বাংলা)