খুঁজুন
বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডায়াবেটিস রোগীদের মুখরোচক বিজ্ঞাপনে পা না দেওয়ার আহ্বান

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ২:০০ পূর্বাহ্ণ
ডায়াবেটিস রোগীদের মুখরোচক বিজ্ঞাপনে পা না দেওয়ার আহ্বান

ডায়াবেটিস চিকিৎসায় মুখরোচক বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগীদের ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে একদল অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, পাতার গুঁড়া ও ডায়েট পদ্ধতি কথা বলে রোগীদের জীবন হুমকির মুখে ফেলছেন বলে দাবি করেন তারা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসেকে সামনে রেখে অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিক্যাল এনডোক্রাইনোলজি এন্ড ডায়বেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসিডবি)’র পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।

স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এমডি ফরিদ উদ্দিন বলেন, রোগীর ডায়াবেটিস কমাতে ওষুধের বিকল্প হিসেবে সজনে পাতা, এই পাতা ওই পাতার গুঁড়াসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ বিক্রি করা হয় বাজারে যা আমাদের মেডিকেল গবেষণার বাইরে। আবার অনেকে বিভিন্ন ধরনের ডায়েটের কথা বলেন, দুই ঘণ্টা পর পর খেতে বলেন। এই ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক রোগী অসুস্থ হয়ে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু অনেক সময় দেরি হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এসব পদ্ধতি মুখোরচক ও অবৈজ্ঞানিক। ডায়াবেটিস রেগীরা নিয়মমাফিক জীবনযাপন করলেই সুস্থ থাকবেন, যার মধ্যে ওষুধও একটি অংশ। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ, পরিমিত ব্যায়াম , রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এসেডবির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস এখন এক মহামারি রোগ। আজ থেকে দুই দশক আগেও ডায়াবেটিস ছিল খুবই স্বল্প পরিচিত, অথচ আজকের দিনে শুধু উন্নত বিশ্বেই নয়, বরং উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত বিশ্বেরও বহুল আলোচিত স্বাস্থ্য সমস্যা এই ডায়াবেটিস। শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামীণ জীবনেও ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে চলেছে আশঙ্কাজনক হারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫০ কোটির মতো এবং ২০৩০ সালের মধ্যে হয়তো ছাড়িয়ে যাবে ৬০ কোটি। বাংলাদেশে সত্তরের দশকে ডায়াবেটিসের প্রবণতা ছিল মাত্র দুই শতাংশের মতো, সেখানে আজ তা ঢাকা শহরেই প্রায় ১০ শতাংশ ছুঁয়েছে এবং প্রিডায়াবেটিস (ডায়াবেটিসের আগের ধাপ) এর হার প্রায় আরও ১০ শতাংশ।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলেও এর সামগ্রিক প্রবণতা ৫-৮ শতাংশের মতো। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার আমাদের দেশে উন্নত বিশ্বের তুলনায় অনেক বেশি। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে মেদ ভুড়ির হার বাড়া এবং কায়িক পরিশ্রমের প্রতি অনিহার কারনে ডায়াবেটিসের হার দিনে দিনে বাড়তেই থাকবে। এভাবে ক্রমেই ডায়াবেটিস বাড়তে থাকলে শুধু ডায়াবেটিসের কারণেই দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য হবে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

ডায়াবেটিসের প্রতিকার এবং প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার বিকল্প নেই উল্লেখ করে সম্মেলনে বক্তারা জানান, ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যার কারণে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়ে হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিউর অন্ধ হয়ে যাওয়া, পায়ে পচন, এমনকি পা কেটে ফেলা পর্যন্ত লাগতে পারে। এত বড় বৈশ্বিক এই জটিল স্বাস্থ্য সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধে তাই দরকার জনসচেতনতা এবং জনসম্পৃক্ততা। সময় মতো ইন্টারভেনশন (খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার পরিবর্তন) এর দ্বারা প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ডা একেএম আমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মীর মশাররফ হোসেন, অধ্যাপক ডা রুহুল আমিন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনটি মডারেট করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এ হালিম খান।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সাড়ম্বরে উদযাপিত হচ্ছে, ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘ডায়াবেটিস ও সুস্থতা’ স্লোগানটিই বলে দেয় স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনের সঙ্গে রয়েছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধের নিবিড় সম্পর্ক। আর এতে সুরক্ষিত হবে আগামী প্রজন্ম। সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা বলতে চাই ‘সবার জন্য ডায়াবেটিসের সু-চিকিৎসা এবং সেবা নিশ্চিতকরন : এখন নয়তো কখন’।

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল

সুন্দরবন নিউজ ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল

আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে।

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর।

ব্যবসায়ী ও করদাতাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে করদাতাদের সুবিধার্থে ব্যক্তিশ্রেণির ও কোম্পানির সব করদাতার অনলাইনে ই-রিটার্ন ও অফলাইনে কাগজের রিটার্ন দাখিল উভয় ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়ে আজ এনবিআর থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।

ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

সুন্দরবন নিউজ২৪/ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৫১ অপরাহ্ণ
ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

রাশিয়ার কাজান শহরে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনকে ধ্বংস করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তাতারস্তান অঞ্চলের এই শহরে ছয়টি ড্রোন আবাসিক ভবনে এবং একটি ড্রোন একটি শিল্প কারখানায় আঘাত হানে। এই ঘটনার পর রোববার এক ভিডিও বক্তৃতায় পুতিন বলেন, যারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তারা এর বহু গুণ বেশি ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হবে এবং তাদের এই কাজের জন্য অনুশোচনা করতে হবে।

শনিবার সকালের ওই হামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো হতাহতের খবর জানানো হয়নি। তবে রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, জানালার কাচ ভেঙে তিনজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, ড্রোনের আঘাতে একটি উঁচু ভবনে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কাজান শহরটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত। যদিও ইউক্রেন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এটি কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুতিন অতীতে কিয়েভের কেন্দ্রে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে নতুন অগ্রগতির দাবি করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা খারকিভ অঞ্চলের লোজোভা গ্রাম এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলের সোনৎসিভকা গ্রাম দখল করেছে।

সোনৎসিভকা রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি কুরাখোভের নিকটে অবস্থিত। কুরাখোভে সম্পদসমৃদ্ধ এলাকা রাশিয়ার প্রায় ঘিরে ফেলা হয়ে গেছে এবং এটি মস্কোর জন্য দোনেৎস্ক দখলের চাবিকাঠি হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যতটা সম্ভব এলাকা দখল করতে চাইছে। ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো নির্দিষ্ট সমাধানের পরিকল্পনা জানাননি।

রাশিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা এ বছর ১৯০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় বসতি দখল করেছে। ইউক্রেন বর্তমানে জনবল এবং গোলাবারুদের সংকটের কারণে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

সুন্দরবন নিউজ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯:৩৪ অপরাহ্ণ
১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কু-প্রভাবে পুলিশ যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো পুলিশ করেনি। এসব কর্মকাণ্ড পুলিশকে মারাত্মকভাবে হেয় করেছে। পুলিশ এতটা নির্মম হতে পারে তা চিন্তা করতেই লজ্জা হয়।

শনিবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি এ সময় জানান, তিনি সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিট ঘুরে পুলিশ সদস্যদের মনের কথা জানার চেষ্টা করছেন। তাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য কি করা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কু-প্রভাব আর আসবে না। তবে সু-প্রভাবের প্রয়োজন আছে।

সারা দেশে মিথ্যা মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, কোনো নিরপরাধ লোককে গ্রেফতার করা যাবে না। বরং প্রাথমিক তদন্তে নিরপরাধ মনে হলে তাকে গ্রেফতার না করতে তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনতে, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে শনিবার সকালে সিলেটে পৌঁছান আইজিপি বাহারুল আলম। সিলেটে পৌঁছেই এসএমপি সদর দপ্তরে সিলেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।

প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। শুরুতেই পুলিশ রিফর্ম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে বিষয়টি পুলিশ রিফর্ম কমিশন চিন্তা করছেন, আমরাও তা চাই। সেটা হলো রাজনৈতিক কুপ্রভাব যেন আর পুলিশের ওপর না পড়ে। সু-প্রভাব আসতে পারে। কারণ রাজনীতিবিদরাই আমাদের কান্ডারি। তারাই দেশ চালাবেন। তবে তাদের কু-প্রভাব থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি।

আইজিপি বলেন, গত ১৫ বছরে দলীয়ভাবে এতো কু-প্রভাব আমাদের ওপর আসছে, হেন অন্যায় নেই যা আমরা করিনি। এটা আপনারাও জানেন আমরাও জানি। এটার জন্য আমরা অত্যন্ত দু:খিত এবং লজ্জিত।

বাহারুল আলম বলেন, ‘আমরা তো সেই বাহিনীর সদস্য, আমাদের মধ্যে সেই উপলব্ধিটা আসে, যখন এসব চিত্র দেখি। যেসব ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা পুলিশ ঘটায়নি। সেনাবাহিনী হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, কিন্তু পুলিশ এতো নির্মম তা আমি ব্যক্তিগতভাবেও ভাবতে পারিনা। এটা রাজনীতিবিদরা কেন করতে গেলেন? দলীয় কিংবা গোষ্ঠির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এমন আদেশ দেওয়া হলো যে, মানুষের প্রাণ সংহার করে ফেলবেন? আগে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাতো কিন্তু এভাবে প্রাণে মেরে ফেলবে- এর জবাব আমার কাছে নেই। যে পর্যায়ে পুলিশ চলে গেছে সেখান থেকে উত্তরণ ঘটানোই আমার বড় চ্যালেঞ্জ’।

পুলিশ যে কর্মস্পৃহা হারিয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের সহকর্মীরা মারা গেছে, মব জাস্টিস পুলিশের বিরুদ্ধেও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে, মানসিকভাবে তাদের মধ্যে ঝড় বয়ে গেছে। শুধু পুলিশ নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ঝড় বয়ে গেছে। কারণ আমরা এসব দেখে অভ্যস্ত নই।

তিনি বলেন, পুলিশ যেহেতু একেবারে সামনের সারিতে ছিলো, তার তাদের ওপরেই প্রভাব বেশি পড়েছে। পুলিশ যখন দেখেছে, তার সহকর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে, আবার কেউ দৌড়ে এসে লাথি মারছে পুলিশকে। কারণ মানুষের ভেতরে এতো ঘৃণা জন্মেছে যে, তা আর মানুষ নিতে পারছে না। আর পুলিশ এইসব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাদের কর্মস্পৃহা হারিয়েছে। পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই ঢাকায় বসে না থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের কাছে যাচ্ছি, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা কি ভাবছে, তারা কি চায়- সেগুলো শুনে ব্যবস্থা নেওয়াই আমার কাজ। আমি হয়তো সব পারবো না, তবে তাদের মনের কষ্টের কথা শুনতে চাই, তাতে তাদের মন হয়তো হালকা হবে।

পুলিশ হত্যা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা প্রশমনে কি উদ্যোগ নেবেন- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ এখন একটা মনভাঙা অবস্থায় রয়েছে। যার যা সক্ষমতা ছিলো তাও এখন কাজ করছে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিশ্বাসটা ভেঙে গেছে, যে আমি আবার মানুষের কাছে যাব, কাজ করবে। ভয়ে, আতংকে, সহকর্মীদের মৃত্যুতে, তারপর আবার দেখেছে যে সিনিয়র অফিসাররা হুকুম দিয়ে পালিয়ে গেছে। কোথাও তো একজন এসপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেউ তো মারা যাননি! যারা মারা গেছে, তারা ইন্সপেক্টর টু কনস্টেবল। তার মানে আমরা অফিসাররা পালিয়ে গেছি পুরো ফোর্সকে অনিরাপদ করে। এখন এই ফোর্সকে আবারও উজ্জীবিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।

৫ আগষ্ট ও পরবর্তী সময়ে পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। এর মধ্যে দেড় হাজার অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি বলেন, এসব অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। তবে এসব উদ্ধার করা তখনই সম্ভব হবে, যখন সব মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। তখন সমাজের মানুষজনই এসব অস্ত্রের খোঁজ দেবে।

এর আগে সারা দেশে নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইজিপি বলেন, ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্তে যাদের নিরপরাধ মনে হবে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করতে হবে যে, তাকে গ্রেফতার করা হবে না। এছাড়া একটি কমিটি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। যে কমিটি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই নিরপরাধ মানুষকে মামলা থেকে বাদ দিতে পারবেন।

এদিন দুপুরের পর সিলেট পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। তাদের কষ্টের কথা শোনেন। তাদের কষ্ট লাঘবের আশ্বাস দেন।