খুঁজুন
সোমবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিকল্প হিসেবে থাইল্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন বাংলাদেশি রোগীরা

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:২৭ অপরাহ্ণ
ভারতের বিকল্প হিসেবে থাইল্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন বাংলাদেশি রোগীরা

বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যু সীমিত করেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। ফলে বাংলাদেশি রোগীরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের বিকল্প হিসেবে থাইল্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়া থাইল্যান্ডের হাসপাতালের কর্মীদের আন্তরিকতা ও সহজ ই-ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে চিকিৎসা নিতে ইচ্ছুকদের সংখ্যা বাড়ছে।

‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মান ও থাইল্যান্ডে বহির্মুখী চিকিৎসা ভ্রমণ’ বিষয়ক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশি রোগীদের থাইল্যান্ডের চিকিৎসা সেবা নিয়ে ইতিবাচক ধারণা রয়েছে। তাই তারা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডকে বেছে নিচ্ছেন।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব আলী এবং অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির সিনিয়র লেকচারার ড. অনিতা মেধেকার।

তারা বলেন, চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডকে পছন্দের প্রধান কারণ হলো রোগীরা বিশ্বাস করেন, দেশটি তুলনামূলক উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে।

যেসব প্রতিষ্ঠান ভিসা নিয়ে কাজ করে এবং বিদেশি হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্টের ব্যবস্থা করে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দুই থেকে তিন মাসে থাইল্যান্ডে মেডিকেল ভিসা পেতে আগ্রহী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন ৪২ বছর বয়সী সাবিনা আক্তার। তিনি ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করলেও পাননি। তাই কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য বিকল্প হিসেবে ব্যাংককে বেছে নেনে।

সাবিনা আক্তার জানান, তিনি থাই মেডিকিউরের পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি সামিটেজ সুখুমভিট হাসপাতালের কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যান।

‘যদিও চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশের শীর্ষ বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় একটু বেশি ছিল। তবে সেখানকার মেডিকেল কর্মীদের আন্তরিকতা ও চিকিৎসার মান অনেক ভালো ছিল,’ বলেন তিনি।

একই কথা বলেন লাবিবা, যার এক আত্মীয় সম্প্রতি ভারতের ভিসা না পেয়ে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন।

তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লাবিবা বলেন, ‘যদিও থাইল্যান্ডে চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশের তুলনায় সামান্য বেশি, তবুও বাংলাদেশি রোগীদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প।’

ঢাকায় থাই মেডিকিউর অফিসের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ নাজনীন আক্তার সৃষ্টি বলেন, ‘সেপ্টেম্বর থেকে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতে ইচ্ছুক রোগীর সংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশের বেশি।’

তিনি জানান, আগস্টের আগে তারা প্রতি মাসে গড়ে ২০ জন রোগীর মেডিকেল ভিসা প্রসেস করতে পারত। কিন্তু অক্টোবর থেকে এই সংখ্যা বেড়ে প্রতি মাসে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।

নাজনীন আক্তার সৃষ্টি উল্লেখ করেন, গুরুতর অসুস্থ রোগীরা ভারতীয় ভিসা না পেলে প্রাথমিকভাবে থাইল্যান্ডকে বেছে নিচ্ছেন।

তার ধারণা, হয়তো থাই সরকার হয়তো এটি বুঝতে পেরেছে। তাই ই-ভিসা চালু করে বাংলাদেশি পর্যটক ও রোগীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ডের জন্য ভিসা পেতে ইচ্ছুকরা এখন আবেদনের ১০ দিনের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে ভিসা পেতে পারেন।

‘যদি আবেদনকারী বৈধ কাগজপত্র দেয় ও তাদের ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা থাকে, তাহলে সাধারণত থাইল্যান্ডের দূতাবাস ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে না,’ যোগ করেন তিনি।

থাইল্যান্ডের বুমরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের বাংলাদেশি অংশীদার থাই মেডি এক্সপ্রেসের নির্বাহী (প্যাশেন্ট রিলেশনস) ইশতিয়াক আহমেদ ইমন বলেন, গত তিন-চার মাসে রোগীর প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে।

তবে সম্ভাব্য সংখ্যা নিয়ে কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত বিধিনিষেধ আরোপ করায় থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি রোগী যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে।

বুমরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৬০ জন বাংলাদেশি রোগী ভর্তি করা হয়েছে। যেখানে আগের মাসিক গড় ছিল প্রায় ৪০ জন।

‘সুতরাং, বাংলাদেশ থেকে রোগীর আগমন প্রায় ৬৭ শতাংশ বেড়েছে,’ বলেন তিনি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশি রোগীরা সাধারণত বুমরুনগ্রাদ ও ব্যাংকক হাসপাতাল পছন্দ করেন। কারণ ডেডিকেটেড হেল্প ডেস্ক থাকার কারণে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে সেবা নিতে পারেন।

ব্যাংকক হাসপাতাল বাংলাদেশ অফিসের অপারেশন ম্যানেজার আব্দুল কাইউম বলেন, এটা সত্য যে—সম্প্রতি মেডিকেল ভিসা প্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়ায় ভিসা প্রসেসিংয়ের চাপ বেশ বেড়েছে।

তিনি জানান, তারা আগে প্রতি মাসে চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ২০টি ভিসা প্রসেস করত। কিন্তু এখন তা বেড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৩০টিতে পৌঁছেছে।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, তারা বুঝতে পেরেছেন যে—ডিসেম্বরের পর বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে ভ্রমণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

‘এ কারণে আমরা প্রতি সপ্তাহে দুটি অতিরিক্ত ফ্লাইট যোগ করেছি। এখন আমরা প্রতি সপ্তাহে নয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করি,’ বলেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের খরচ কমেছে, তবে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে বাড়ছে।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:৪৭ অপরাহ্ণ
বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

আজ ৫ অক্টোবর (রোববার), বিশ্ব শিক্ষক দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। এবছরের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘শিক্ষকতা পেশা : মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ বাংলাদেশেও এই দিবস উদযাপন হবে।

শিক্ষক ছাড়া জাতির অগ্রগতি অসম্ভব—সেজন্য ১৯৯৪ সাল থেকে ইউনেস্কোর উদ্যোগে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে এই দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ সভায় ৫ অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালন শুরু হয়। ইউনেস্কোর অনুমোদনে প্রতিবছর পৃথক প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

একজন শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না, তিনি একজন শিক্ষার্থীর চিন্তা, চরিত্র ও ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শিক্ষকরাই জাতিকে আলোকিত পথে এগিয়ে নিয়ে যান এবং সমাজকে গড়ে তোলেন জ্ঞান ও নৈতিকতার ভিত্তিতে। তাই তাদের ভূমিকা জাতি গঠনের কারিগর হিসেবে অনন্য ও অপরিসীম। এই দিবসটি শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কাজকে মূল্যায়ন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষকরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করেন এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে অবদান রাখেন। শিক্ষকদের পেশাগত স্বাধীনতা, অধিকার এবং উন্নত বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশার প্রতি তরুণদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করা এই দিবসের অন্যতম তাৎপর্য।

দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান। শিক্ষক দিবস কেবল আনুষ্ঠানিকতার দিন নয়, এটি শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকার ও গুরুত্ব পুনরায় তুলে ধরার এক মূল্যবান মুহূর্ত।

দিবসি পালনের অংশ হিসেবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোববার সকালে গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১২ জন শিক্ষককে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। এজন্য প্রাথমিকভাবে ৩৬ জন শিক্ষককে নির্বাচিত করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন বিশ্বদ্যিালয়, কলেজ, মাধ্যমিক, মাদরাসা, কারিগরি ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের বাছাই করা হয়।

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই শুরু হয় বিসর্জন।

এর আগে ণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। আরতি, শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিকাল থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেন তারা।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নবমী পূজার পর দেবী মর্ত্যলোক ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যান। তাই দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতার। দর্পণ বিসর্জনের পর রীতি অনুযায়ী, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীকে সিঁদুর, তেল, পান-চিনি নিবেদন করে ভক্তরা অশ্রুসজল নয়নে বিদায় জানান। বিসর্জনের মাধ্যমে আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা।

প্রতি বছরের মতো এবারও শ্যামনগরের খোলপেটুয়া নদীতে জেলার দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদী, খাল এবং স্থানীয় পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। দুপুর থেকে ট্রাক ও ভ্যানে করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় খোলপেটুয়া নদীতে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও বিসর্জন দেখতে হাজির হন হাজারো মানুষ। দ্বিতীয় টাকি খ্যাত বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীতে বিসর্জন কার্যক্রমের নিরাপত্তায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।

বিকেলে খোলপেটুয়া নদী তীরে গিয়ে বিসর্জন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্লা প্রমুখ।

এ বছর জেলার ৫৮৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তের ইছামতি নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হাজির হন দুই বাংলার হাজারো মানুষ। তবে, এবারো ইছামতিতে ভাসেনি মিলনমেলার তরী। নিজ নিজ সীমানার মধ্যে থেকেই প্রতিমা বিসর্জন দেন তারা।

এই ৩ ফলের রসে স্বাভাবিকভাবে বাড়বে সন্তানের উচ্চতা

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ
এই ৩ ফলের রসে স্বাভাবিকভাবে বাড়বে সন্তানের উচ্চতা

অনেক বাবা-মা মনে করেন, সন্তান হয়তো ঠিকমতো খাচ্ছে না বলেই উচ্চতা বাড়ছে না। আসলে শুধু খাওয়ার পরিমাণই নয়, কী ধরনের খাবার খাচ্ছে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের বৃদ্ধি (গ্রোথ) এবং উচ্চতা বাড়ানোর জন্য দরকার সঠিক পুষ্টি—যেমন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিনস, আয়রন ও খনিজ পদার্থ।

এমন কিছু ফল আছে যেগুলোর রসে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান শিশুদের হাড় মজবুত করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং স্বাভাবিকভাবে উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। নিচে এমন তিনটি ফলের রসের কথা বলা হলো, যেগুলো শিশুদের ডায়েটে যুক্ত করলে উপকার পেতে পারেন।

১. পেয়ারার রস

পেয়ারা শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এর রসও অনেক পুষ্টিকর। এতে থাকে:

ভিটামিন C – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ক্যালসিয়াম – হাড় মজবুত করে

ভিটামিন B ও ফাইবার – হজমে সাহায্য করে

শিশুরা যদি নিয়মিত পেয়ারার রস খায়, তবে তাদের হজমশক্তি ভালো থাকে, যা সরাসরি পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

টিপস: বাড়িতে টাটকা পেয়ারা ব্লেন্ড করে অল্প পানি ও মধু মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর জুস বানাতে পারেন।

২. স্ট্রবেরির রস

স্ট্রবেরি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, এর গুণও তেমন চমৎকার। এতে থাকে:

ভিটামিন C, আয়রন ও ক্যালসিয়াম

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট – শরীরের কোষকে সুস্থ রাখে

প্রোটিন – দেহের গঠন ও হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায়

স্ট্রবেরির রস শিশুদের হাড়কে শক্তিশালী করে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। নিয়মিত এই রস খাওয়ালে শিশুদের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলতে পারে।

টিপস: স্ট্রবেরির মৌসুমে টাটকা ফল দিয়ে রস তৈরি করুন, চাইলে দুধ বা কলাও মিশিয়ে দিতে পারেন।

৩. কলার শেক

কলার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুদের জন্য এক কথায় পারফেক্ট। এতে থাকে:

পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম – হাড় ও পেশিকে মজবুত করে

ভিটামিন B6 ও ফাইবার

প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম – দেহের গঠন ও গ্রোথে সহায়ক

প্রতিদিন এক গ্লাস কলার শেক খেলে শিশুদের শক্তি বাড়ে, হজম ভালো হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ হয়।

টিপস: দুধ, কলা, অল্প মধু এবং চাইলে সামান্য বাদাম দিয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর কলার শেক তৈরি করুন।

অতিরিক্ত কিছু পরামর্শ

শুধু ফলের রস খেলেই উচ্চতা বাড়বে না। এর সঙ্গে প্রয়োজন:

– সঠিক ঘুম – দিনে অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা

– নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা – যেমন সাঁতার, দড়ি লাফ, বাস্কেটবল

– পর্যাপ্ত পানি পান – শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে

– সঠিক খাবার – প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ও সবজি

উচ্চতা বৃদ্ধি একটি ধীর ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। সন্তানকে কখনোই জোর করে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। বরং ফলের রসের মতো পুষ্টিকর ও সুস্বাদু বিকল্প দিয়ে তাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

এই ৩টি ফলের রস তাদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় যুক্ত করলে ধীরে ধীরে আপনি ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।

মনে রাখবেন, সন্তান যদি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা কম উচ্চতার হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই একবার পেডিয়াট্রিশিয়ানের (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ) পরামর্শ নিন। কারণ এর পেছনে অন্য কোনো শারীরিক কারণও থাকতে পারে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস (বাংলা)