খুঁজুন
সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস যেসব কারণে বিতর্কিত হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

সুন্দরবন নিউজ ২৪ /ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:৩৬ অপরাহ্ণ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস যেসব কারণে বিতর্কিত হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বেশকিছু বড় কাজ হয়েছে। কাজগুলো তড়িঘড়ি সম্পন্ন করতে গিয়ে কিছু বিষয়ে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ডিসি নিয়োগে দুই দফায় কোটি কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সচিব, জেলা প্রশাসক এবং বিদেশে পদায়নেও ভুল ধরা পড়েছে। তবে বড় কাজগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠন করা হয়েছে কমিশন। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়।

এছাড়া প্রতিবছর সব সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী দাখিল, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। অবসর ও ওএসডি বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের ফলে শূন্যপদে সচিব নিয়োগ, তিন স্তরে (উপসচিব, যুগ্মসচিব এবং অতিরিক্ত সচিব) ৪৬০ জন বঞ্চিত কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৬০ শতাংশের পদায়ন এবং সাবেক সরকারের দেওয়া ৮০ কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। নতুন করে ৩৫ কর্মকর্তাকে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, ৫১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে কমিটি করে তদন্ত করেছে মন্ত্রণালয়টি।

দ্রুত ব্যাপকভিত্তিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে গিয়ে কিছু ভুল-ভ্রাান্তিও ঘটেছে। যা প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। বিশেষ করে ডিসি নিয়োগ দিতে গিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কাজগুলো সচেতনতা এবং সাবধানতার সঙ্গে সম্পন্ন করলে অনাকাক্সিক্ষত বিষয়গুলো এড়ানো যেত বলে মনে করেন প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কম সময়ে ব্যাপকভিত্তিক কাজ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সব কাজ ধীরস্থিরভাবে ভেবেচিন্তে করতে হবে। কাজের গতি আরও বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমাদের অর্জনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হবে। সেখানে বিস্তারিত কাজের বিবরণ দেওয়া থাকবে। তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া যুগান্তরকে বলেন, অল্প সময়ে যে কাজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করেছে তা সন্তোষজনক। যে কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট বিতর্ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিরাট বড় অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। যদি সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করা হতো, তাহলে বিতর্ক এড়ানো অসম্ভব ছিল না। তিনি আরও বলেন, সব কাজ ধীরেসুস্থে ভেবেচিন্তে সম্পন্ন করতে হবে। কাজের গতি বাড়াতে হবে। আবার কাজের গতি বাড়াতে গিয়ে ভুলভাল করা যাবে না।

জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৮ সালের পর এই প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, সরকারি কর্মচারীর ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী, সন্তানের সম্পদ বিবরণী চেয়েছে সরকার। দীর্ঘ ১৬ বছরের মধ্যে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার বিধান অনুসারে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হয়নি। অথচ আচরণবিধিতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধি উল্লেখ করে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নিয়ম রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে চাকরিপ্রত্যাশীরা। সরকার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামীকাল (বুধবার) কমিটি সরকারের কাছে চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা সংক্রান্ত সুপারিশ পেশ করার কথা । গত দুই মাসে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ৮০ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে সরকারের মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সচিব পর্যায়ের (গ্রেড-১) কর্মকর্তারা আছেন।

এ সময়ের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ও সাতজন সিনিয়র সচিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবসর, ওএসডি কিংবা চুক্তি বাতিলের ফলে শূন্যপদে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগে কোনো সচিব নেই। জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ড. আবদুল মোমেনকে। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনে সদস্যের একটি পদ শূন্য রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সদস্য ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। টেকনিক্যাল পদের চুক্তিও পর্যায়ক্রমে বাতিল হবে। বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত দুই মাসে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে ১২১ জন, উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে ১৩৩ জন এবং যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে ২০৬ জন অর্থাৎ তিন স্তরে ৪৬০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্তরা বিগত সরকারের সময়ে অজ্ঞাত কারণে পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের প্রায় ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে পদায়ন করা হয়েছে। বাকি প্রায় ৪০ শতাংশের পদায়ন নিয়ে কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিসিদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ডিসি নিয়োগের লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের ফিটলিস্ট তৈরির কার্যক্রম হাতে নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দীর্ঘ ২০ দিন পর ডিসির ফিটলিস্ট চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ৯ সেপ্টেম্বর ২৫ জেলায় ডিসি নিয়োগের জিও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ওই তালিকার একজনের নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে আরেকজনকে ডিসি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর ৩৪ জেলায় ডিসি নিয়োগের জিও জারি হয়। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ওই তালিকা থেকে আটজনের নিয়োগ বাতিল করা হয়। দুই দিনে ৯ জন নতুন ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর জারি করা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ৮ জেলার ডিসি পদ এখনো শূন্য। বর্তমানে ৫১ নতুন ডিসি কাজ করছেন। আগের সরকারের নিয়োগ পাওয়া ৫ ডিসি এখনো মাঠে কর্মরত। ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ডিসি নিয়োগে বিগত সরকারের সময় পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের নাম না থাকায় তারা মাঠ প্রশাসনে যুগ্মসচিব কেএম আলী আজমের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

বিষয়টি তদন্তে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকমল হোসেন আজাদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ১৭ উপসচিবকে দোষী করে শাস্তির সুপারিশ করেন আকমল হোসেন আজাদ। এছাড়া ডিসি নিয়োগে প্রথমে ৩ কোটি টাকার ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট যুগ্মসচিব ড. মো. জিয়াউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে। অবশ্য তদন্তে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরে ডিসি নিয়োগে ১০ কোটি টাকা ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে খোদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে। অবশ্য ঘুস গ্রহণের অভিযোগ সচিব প্রত্যাখ্যান করেন। বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদেও বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। একটি কমিটি গঠন করে ১০ কোটি টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ তাদের তদন্ত করার কথা ।

গত ৩ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব মো. সফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে বলেন, তিনজন উপদেষ্টা বিষয়টি তদন্ত করবেন। তদন্ত কমিটিতে সিনিয়র সাংবাদিকদের রাখা হবে। তদন্তে যে পক্ষ দোষী হবেন তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে তদন্ত কমিটি কবে হবে সে বিষয়টি তখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের বিষয়ে এখনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে গিয়ে বাছবিচার না করেই আদেশ জারি করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে ঢুকে পড়ছেন। বিশেষ করে খাদ্য ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা এলাহী দাদ খানকে সিনিয়র সচিব হিসাবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। অথচ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ কেলেঙ্কারির কারিগর। অবশ্য পরে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হিসাবে খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে নিয়োগ দিয়ে তা কয়েকদিনের মাথায় বাতিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিগত আন্দোলনের বিরোধিতার নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সিনিয়র সচিব, ডিসি ও রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিতর্কিত উদ্যোগে প্রশাসনের অনেক অর্জন ম্লান করেছে।

এছাড়া অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও জনপ্রশাসন সংস্কারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তবে কমিশন এখনো কাজ শুরু করেনি।

ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

সুন্দরবন নিউজ২৪/ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৫১ অপরাহ্ণ
ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

রাশিয়ার কাজান শহরে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনকে ধ্বংস করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তাতারস্তান অঞ্চলের এই শহরে ছয়টি ড্রোন আবাসিক ভবনে এবং একটি ড্রোন একটি শিল্প কারখানায় আঘাত হানে। এই ঘটনার পর রোববার এক ভিডিও বক্তৃতায় পুতিন বলেন, যারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তারা এর বহু গুণ বেশি ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হবে এবং তাদের এই কাজের জন্য অনুশোচনা করতে হবে।

শনিবার সকালের ওই হামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো হতাহতের খবর জানানো হয়নি। তবে রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, জানালার কাচ ভেঙে তিনজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, ড্রোনের আঘাতে একটি উঁচু ভবনে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কাজান শহরটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত। যদিও ইউক্রেন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এটি কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুতিন অতীতে কিয়েভের কেন্দ্রে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে নতুন অগ্রগতির দাবি করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা খারকিভ অঞ্চলের লোজোভা গ্রাম এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলের সোনৎসিভকা গ্রাম দখল করেছে।

সোনৎসিভকা রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি কুরাখোভের নিকটে অবস্থিত। কুরাখোভে সম্পদসমৃদ্ধ এলাকা রাশিয়ার প্রায় ঘিরে ফেলা হয়ে গেছে এবং এটি মস্কোর জন্য দোনেৎস্ক দখলের চাবিকাঠি হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যতটা সম্ভব এলাকা দখল করতে চাইছে। ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো নির্দিষ্ট সমাধানের পরিকল্পনা জানাননি।

রাশিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা এ বছর ১৯০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় বসতি দখল করেছে। ইউক্রেন বর্তমানে জনবল এবং গোলাবারুদের সংকটের কারণে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

সুন্দরবন নিউজ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯:৩৪ অপরাহ্ণ
১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কু-প্রভাবে পুলিশ যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো পুলিশ করেনি। এসব কর্মকাণ্ড পুলিশকে মারাত্মকভাবে হেয় করেছে। পুলিশ এতটা নির্মম হতে পারে তা চিন্তা করতেই লজ্জা হয়।

শনিবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি এ সময় জানান, তিনি সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিট ঘুরে পুলিশ সদস্যদের মনের কথা জানার চেষ্টা করছেন। তাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য কি করা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কু-প্রভাব আর আসবে না। তবে সু-প্রভাবের প্রয়োজন আছে।

সারা দেশে মিথ্যা মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, কোনো নিরপরাধ লোককে গ্রেফতার করা যাবে না। বরং প্রাথমিক তদন্তে নিরপরাধ মনে হলে তাকে গ্রেফতার না করতে তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনতে, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে শনিবার সকালে সিলেটে পৌঁছান আইজিপি বাহারুল আলম। সিলেটে পৌঁছেই এসএমপি সদর দপ্তরে সিলেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।

প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। শুরুতেই পুলিশ রিফর্ম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে বিষয়টি পুলিশ রিফর্ম কমিশন চিন্তা করছেন, আমরাও তা চাই। সেটা হলো রাজনৈতিক কুপ্রভাব যেন আর পুলিশের ওপর না পড়ে। সু-প্রভাব আসতে পারে। কারণ রাজনীতিবিদরাই আমাদের কান্ডারি। তারাই দেশ চালাবেন। তবে তাদের কু-প্রভাব থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি।

আইজিপি বলেন, গত ১৫ বছরে দলীয়ভাবে এতো কু-প্রভাব আমাদের ওপর আসছে, হেন অন্যায় নেই যা আমরা করিনি। এটা আপনারাও জানেন আমরাও জানি। এটার জন্য আমরা অত্যন্ত দু:খিত এবং লজ্জিত।

বাহারুল আলম বলেন, ‘আমরা তো সেই বাহিনীর সদস্য, আমাদের মধ্যে সেই উপলব্ধিটা আসে, যখন এসব চিত্র দেখি। যেসব ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা পুলিশ ঘটায়নি। সেনাবাহিনী হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, কিন্তু পুলিশ এতো নির্মম তা আমি ব্যক্তিগতভাবেও ভাবতে পারিনা। এটা রাজনীতিবিদরা কেন করতে গেলেন? দলীয় কিংবা গোষ্ঠির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এমন আদেশ দেওয়া হলো যে, মানুষের প্রাণ সংহার করে ফেলবেন? আগে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাতো কিন্তু এভাবে প্রাণে মেরে ফেলবে- এর জবাব আমার কাছে নেই। যে পর্যায়ে পুলিশ চলে গেছে সেখান থেকে উত্তরণ ঘটানোই আমার বড় চ্যালেঞ্জ’।

পুলিশ যে কর্মস্পৃহা হারিয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের সহকর্মীরা মারা গেছে, মব জাস্টিস পুলিশের বিরুদ্ধেও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে, মানসিকভাবে তাদের মধ্যে ঝড় বয়ে গেছে। শুধু পুলিশ নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ঝড় বয়ে গেছে। কারণ আমরা এসব দেখে অভ্যস্ত নই।

তিনি বলেন, পুলিশ যেহেতু একেবারে সামনের সারিতে ছিলো, তার তাদের ওপরেই প্রভাব বেশি পড়েছে। পুলিশ যখন দেখেছে, তার সহকর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে, আবার কেউ দৌড়ে এসে লাথি মারছে পুলিশকে। কারণ মানুষের ভেতরে এতো ঘৃণা জন্মেছে যে, তা আর মানুষ নিতে পারছে না। আর পুলিশ এইসব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাদের কর্মস্পৃহা হারিয়েছে। পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই ঢাকায় বসে না থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের কাছে যাচ্ছি, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা কি ভাবছে, তারা কি চায়- সেগুলো শুনে ব্যবস্থা নেওয়াই আমার কাজ। আমি হয়তো সব পারবো না, তবে তাদের মনের কষ্টের কথা শুনতে চাই, তাতে তাদের মন হয়তো হালকা হবে।

পুলিশ হত্যা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা প্রশমনে কি উদ্যোগ নেবেন- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ এখন একটা মনভাঙা অবস্থায় রয়েছে। যার যা সক্ষমতা ছিলো তাও এখন কাজ করছে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিশ্বাসটা ভেঙে গেছে, যে আমি আবার মানুষের কাছে যাব, কাজ করবে। ভয়ে, আতংকে, সহকর্মীদের মৃত্যুতে, তারপর আবার দেখেছে যে সিনিয়র অফিসাররা হুকুম দিয়ে পালিয়ে গেছে। কোথাও তো একজন এসপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেউ তো মারা যাননি! যারা মারা গেছে, তারা ইন্সপেক্টর টু কনস্টেবল। তার মানে আমরা অফিসাররা পালিয়ে গেছি পুরো ফোর্সকে অনিরাপদ করে। এখন এই ফোর্সকে আবারও উজ্জীবিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।

৫ আগষ্ট ও পরবর্তী সময়ে পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। এর মধ্যে দেড় হাজার অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি বলেন, এসব অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। তবে এসব উদ্ধার করা তখনই সম্ভব হবে, যখন সব মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। তখন সমাজের মানুষজনই এসব অস্ত্রের খোঁজ দেবে।

এর আগে সারা দেশে নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইজিপি বলেন, ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্তে যাদের নিরপরাধ মনে হবে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করতে হবে যে, তাকে গ্রেফতার করা হবে না। এছাড়া একটি কমিটি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। যে কমিটি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই নিরপরাধ মানুষকে মামলা থেকে বাদ দিতে পারবেন।

এদিন দুপুরের পর সিলেট পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। তাদের কষ্টের কথা শোনেন। তাদের কষ্ট লাঘবের আশ্বাস দেন।

পাকাপাকি ভাবে ভারত ছাড়ছেন কোহলি!

সুন্দরবন নিউজ২৪/স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ
পাকাপাকি ভাবে ভারত ছাড়ছেন কোহলি!

ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলি শিগগিরই পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে। কোহলির শৈশবের কোচ রাজকুমার শর্মা সম্প্রতি দৈনিক জাগরণ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কোহলি তার স্ত্রী আনুশকা শর্মা ও সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে বসবাস শুরু করার চিন্তা করছেন। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি, তবে দ্বিতীয় সন্তান আকায় জন্মের পর থেকেই কোহলি ও আনুশকা পরিবার নিয়ে লন্ডনে অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন।

রাজকুমার শর্মা বলেন, ‘হ্যাঁ, বিরাট তার স্ত্রী আনুশকা ও সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। খুব শিগগিরই তিনি ভারত ছেড়ে লন্ডনে স্থায়ী হবেন। তবে আপাতত কোহলি ক্রিকেটের পাশাপাশি বেশিরভাগ সময় পরিবারকে দিচ্ছেন।’

কোহলি ও আনুশকার লন্ডনে নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর থেকেই তাদের লন্ডনে কাটানো সময় আরও বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই দম্পতি খুব শিগগিরই স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করবেন।

৩৬ বছর বয়সী কোহলি ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে কতদিন খেলবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। সাম্প্রতিক সময়ে তার পারফরম্যান্স কিছুটা ম্লান থাকায় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভক্ত ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে।

১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে র‌্যাঙ্কিংয়ে কোহলি

এ বছরের শুরুতে অবসর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোহলি জানিয়েছিলেন, অবসরের পর দীর্ঘ সময় তাকে আর দেখা যাবে না। আরসিবি-এর সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমাদের ক্যারিয়ারের একটা শেষ সময় থাকে। তাই আমি আগেভাগেই সব পরিকল্পনা করছি। আমি চাই না আমার ক্যারিয়ার শেষে কোনো অতৃপ্তি থাকুক।’

কোহলি আরও বলেন, ‘আমি যখন অবসর নেব, তখন দীর্ঘ সময়ের জন্য হারিয়ে যাব (হাসি)। তাই যতদিন খেলব, ততদিন নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এটাই আমাকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।’

কোহলির এই পরিকল্পনা তার ভক্তদের মধ্যে নতুন কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কবে তিনি পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমান।