খুঁজুন
রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস যেসব কারণে বিতর্কিত হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

সুন্দরবন নিউজ ২৪ /ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:৩৬ অপরাহ্ণ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস যেসব কারণে বিতর্কিত হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বেশকিছু বড় কাজ হয়েছে। কাজগুলো তড়িঘড়ি সম্পন্ন করতে গিয়ে কিছু বিষয়ে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ডিসি নিয়োগে দুই দফায় কোটি কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সচিব, জেলা প্রশাসক এবং বিদেশে পদায়নেও ভুল ধরা পড়েছে। তবে বড় কাজগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠন করা হয়েছে কমিশন। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়।

এছাড়া প্রতিবছর সব সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী দাখিল, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। অবসর ও ওএসডি বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের ফলে শূন্যপদে সচিব নিয়োগ, তিন স্তরে (উপসচিব, যুগ্মসচিব এবং অতিরিক্ত সচিব) ৪৬০ জন বঞ্চিত কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৬০ শতাংশের পদায়ন এবং সাবেক সরকারের দেওয়া ৮০ কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। নতুন করে ৩৫ কর্মকর্তাকে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, ৫১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে কমিটি করে তদন্ত করেছে মন্ত্রণালয়টি।

দ্রুত ব্যাপকভিত্তিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে গিয়ে কিছু ভুল-ভ্রাান্তিও ঘটেছে। যা প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। বিশেষ করে ডিসি নিয়োগ দিতে গিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কাজগুলো সচেতনতা এবং সাবধানতার সঙ্গে সম্পন্ন করলে অনাকাক্সিক্ষত বিষয়গুলো এড়ানো যেত বলে মনে করেন প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কম সময়ে ব্যাপকভিত্তিক কাজ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সব কাজ ধীরস্থিরভাবে ভেবেচিন্তে করতে হবে। কাজের গতি আরও বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমাদের অর্জনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হবে। সেখানে বিস্তারিত কাজের বিবরণ দেওয়া থাকবে। তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া যুগান্তরকে বলেন, অল্প সময়ে যে কাজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করেছে তা সন্তোষজনক। যে কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট বিতর্ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিরাট বড় অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। যদি সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করা হতো, তাহলে বিতর্ক এড়ানো অসম্ভব ছিল না। তিনি আরও বলেন, সব কাজ ধীরেসুস্থে ভেবেচিন্তে সম্পন্ন করতে হবে। কাজের গতি বাড়াতে হবে। আবার কাজের গতি বাড়াতে গিয়ে ভুলভাল করা যাবে না।

জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৮ সালের পর এই প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, সরকারি কর্মচারীর ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী, সন্তানের সম্পদ বিবরণী চেয়েছে সরকার। দীর্ঘ ১৬ বছরের মধ্যে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার বিধান অনুসারে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হয়নি। অথচ আচরণবিধিতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধি উল্লেখ করে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নিয়ম রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলন করছে চাকরিপ্রত্যাশীরা। সরকার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামীকাল (বুধবার) কমিটি সরকারের কাছে চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা সংক্রান্ত সুপারিশ পেশ করার কথা । গত দুই মাসে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ৮০ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে সরকারের মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সচিব পর্যায়ের (গ্রেড-১) কর্মকর্তারা আছেন।

এ সময়ের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ও সাতজন সিনিয়র সচিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবসর, ওএসডি কিংবা চুক্তি বাতিলের ফলে শূন্যপদে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগে কোনো সচিব নেই। জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ড. আবদুল মোমেনকে। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনে সদস্যের একটি পদ শূন্য রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সদস্য ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। টেকনিক্যাল পদের চুক্তিও পর্যায়ক্রমে বাতিল হবে। বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত দুই মাসে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে ১২১ জন, উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে ১৩৩ জন এবং যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে ২০৬ জন অর্থাৎ তিন স্তরে ৪৬০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্তরা বিগত সরকারের সময়ে অজ্ঞাত কারণে পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। পদোন্নতিপ্রাপ্তদের প্রায় ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে পদায়ন করা হয়েছে। বাকি প্রায় ৪০ শতাংশের পদায়ন নিয়ে কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিসিদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ডিসি নিয়োগের লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের ফিটলিস্ট তৈরির কার্যক্রম হাতে নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দীর্ঘ ২০ দিন পর ডিসির ফিটলিস্ট চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ৯ সেপ্টেম্বর ২৫ জেলায় ডিসি নিয়োগের জিও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ওই তালিকার একজনের নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে আরেকজনকে ডিসি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর ৩৪ জেলায় ডিসি নিয়োগের জিও জারি হয়। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ওই তালিকা থেকে আটজনের নিয়োগ বাতিল করা হয়। দুই দিনে ৯ জন নতুন ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর জারি করা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ৮ জেলার ডিসি পদ এখনো শূন্য। বর্তমানে ৫১ নতুন ডিসি কাজ করছেন। আগের সরকারের নিয়োগ পাওয়া ৫ ডিসি এখনো মাঠে কর্মরত। ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ডিসি নিয়োগে বিগত সরকারের সময় পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের নাম না থাকায় তারা মাঠ প্রশাসনে যুগ্মসচিব কেএম আলী আজমের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

বিষয়টি তদন্তে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকমল হোসেন আজাদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ১৭ উপসচিবকে দোষী করে শাস্তির সুপারিশ করেন আকমল হোসেন আজাদ। এছাড়া ডিসি নিয়োগে প্রথমে ৩ কোটি টাকার ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট যুগ্মসচিব ড. মো. জিয়াউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে। অবশ্য তদন্তে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরে ডিসি নিয়োগে ১০ কোটি টাকা ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে খোদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে। অবশ্য ঘুস গ্রহণের অভিযোগ সচিব প্রত্যাখ্যান করেন। বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদেও বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। একটি কমিটি গঠন করে ১০ কোটি টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ তাদের তদন্ত করার কথা ।

গত ৩ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব মো. সফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে বলেন, তিনজন উপদেষ্টা বিষয়টি তদন্ত করবেন। তদন্ত কমিটিতে সিনিয়র সাংবাদিকদের রাখা হবে। তদন্তে যে পক্ষ দোষী হবেন তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে তদন্ত কমিটি কবে হবে সে বিষয়টি তখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের বিষয়ে এখনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে গিয়ে বাছবিচার না করেই আদেশ জারি করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে ঢুকে পড়ছেন। বিশেষ করে খাদ্য ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা এলাহী দাদ খানকে সিনিয়র সচিব হিসাবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। অথচ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ কেলেঙ্কারির কারিগর। অবশ্য পরে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হিসাবে খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে নিয়োগ দিয়ে তা কয়েকদিনের মাথায় বাতিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিগত আন্দোলনের বিরোধিতার নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সিনিয়র সচিব, ডিসি ও রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিতর্কিত উদ্যোগে প্রশাসনের অনেক অর্জন ম্লান করেছে।

এছাড়া অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও জনপ্রশাসন সংস্কারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তবে কমিশন এখনো কাজ শুরু করেনি।

বিজ্ঞানীদের বিষ্ময়কর সাফল্য, ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত নতুন করে গজাবে

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৫:২৪ অপরাহ্ণ
বিজ্ঞানীদের বিষ্ময়কর সাফল্য, ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত নতুন করে গজাবে

অনেক প্রজাতির প্রাণীর একাধিকবার দাঁত গজালেও মানুষের ক্ষেত্রে সুস্থ দাঁতের জন্য সুযোগ আসে মাত্র একবারই। তবে এই বাস্তবতা হয়তো শিগগিরই বদলে যেতে পারে।

সম্প্রতি লন্ডনের কিংস কলেজের একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষাগারে দাঁত গজাতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও এখনই এটি মানুষের ওপর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। গবেষণাকে আরও সামনে এগিয়ে যাওয়া জন্য এটিকে বিশাল অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক ডা. আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপনি বলেন, ‘জৈবিক উপায়ে দাঁত প্রতিস্থাপন বা নতুন দাঁত গজানোর ধারণাটিই আমাকে কিংসে নিয়ে এসেছে। আমরা পরীক্ষাগারে দাঁত গজিয়ে জ্ঞানের যে ঘাটতি ছিল তা পূরণ করছি।’

ডা. আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপনি.
আজকাল নিখুঁতভাবে হাসতে পারার আশায় অনেকেই ব্রেস বা ইমপ্লান্টের আশ্রয় নেন। তবে ইমপ্লান্টের মাধ্যমে দাঁত প্রতিস্থাপন সবসময় ঝুঁকিমুক্ত হয় না। ইমপ্লান্টের পর অনেক রোগী নতুন নতুন সম্যার সম্মুখীন হন এবং দীর্ঘদিন ধরে দন্তচিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হয়। যার কারণে রোগীর পাশাপাশি দন্তচিকিৎসকদের জন্যও এটি সমস্যা সৃষ্টি করে।

কিংস কলেজের দন্ত অনুষদের ওরাল অ্যান্ড ক্র্যানিওফেসিয়াল সায়েন্সেস বিভাগের শেষ বর্ষের পিএইচডি শিক্ষার্থী জুয়েচেন ঝাং বলেন, ‘ইমপ্লান্ট করতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয় এবং তা সফল করতে হাড় ও ইমপ্লান্টের মধ্যে সঠিক সমন্বয় দরকার। কিন্তু ল্যাবে তৈরি দাঁত স্বাভাবিকভাবে গজাবে এবং চোয়ালের সঙ্গে একীভূত হবে ঠিক আসল দাঁতের মতো। এই দাঁতগুলো হবে বেশি শক্তিশালী, দীর্ঘস্থায়ী এবং শরীরের পক্ষে আরও উপযোগী ও গ্রহণযোগ্য—যা ফিলিং বা ইমপ্লান্টের চেয়ে উন্নত সমাধান।’

কিংস কলেজ ও ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এক ধরনের বিশেষ উপাদান তৈরি করেছেন, যা কোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ঘটাতে সক্ষম।

এর ফলে এক কোষ অন্য কোষকে দাঁতের কোষে রূপান্তরিত হওয়ার সংকেত দিতে পারে, যা দাঁত গজানোর স্বাভাবিক পরিবেশ অনুকরণ করে নতুন দাঁত গজায়।

পরীক্ষাগারে দাঁত গজানোর জন্য এই প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে। সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—এই দাঁত কীভাবে মানুষের মুখে প্রতিস্থাপন করা যাবে তা নির্ধারণ করা।

জুয়েচেং ঝাং
জুয়েচেন ঝাং বলেন, ‘আমাদের কিছু ধারণা রয়েছে—যেমন দাঁতের কোষগুলো সরাসরি মুখে প্রতিস্থাপন করা এবং সেগুলোকে সেখানেই গজাতে দেওয়া। অথবা দাঁতটি পুরোপুরি ল্যাবে তৈরি করে পরে তা রোগীর মুখে স্থাপন করা যেতে পারে।’

তবে যেভাবেই হোক, পুরো প্রক্রিয়া শুরু হবে পরীক্ষাগার থেকেই।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ দাঁত হারানোর সমস্যায় ভুগছেন। এটি শুধু খাওয়া বা কথা বলায় সমস্যার সৃষ্টি করে না বরং সৌন্দর্যগত ও মানসিক সমস্যা তৈরি করে। এছাড়া ক্ষয় হয়ে যাওয়া দাঁতের ভেতর দিয়ে মুখের জীবাণু রক্তপ্রবাহে ঢুকে হৃদরোগ ও সংক্রমণের কারণও হতে পারে—যা বৃদ্ধদের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

কিংস কলেজের ক্লিনিক্যাল লেকচারার ও প্রস্থোডন্টিক্স বিশেষজ্ঞ সাওরশে ও’টুল বলেন, ‘দাঁত পুনর্জন্মে এই প্রযুক্তি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং এটি দন্তচিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। এটি আমার চিকিৎসাজীবনের সময়কালে কার্যকর হবে কিনা নিশ্চিত নই, তবে আমার সন্তানরা জীবদ্দশায় সম্ভবত দেখা যাবে। আর তাদের সন্তানেরা হয়তো এটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবে।’

পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:১২ অপরাহ্ণ
পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আজ থেকে শুরু হল।

৭ই এপ্রিল সোমবার সকাল ১১ টায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আয়োজনে বুড়িগোয়ালিনী ৭১নং ফরেস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, নৌ পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মী, এনজিও সহ সর্বোপরি মৌয়ালদের নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও ) এ  জেড এম হাছানুর রহমানের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিভিন্ন এনজিও
প্রতিনিধিগণ,জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবক এবং গণমাধ্যম কর্মী।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হাছানুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩৬৪ পাশে ২৪৭১ মাধ্যমে ১২৩৫.৫০ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয় ও ৩৭০.৬৫ কুইন্টাল মোম সংগ্রহ হয়। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয় ২৭,৯২,২৩০ টাকা। ২০২৫ সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩৭ টা মধুর পাশ হয়েছে।


প্রসঙ্গতঃ বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাস নিয়ে ১ এপ্রিল সকাল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে এবার মধু আহরণ মৌসুমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো আজ ৭ এপ্রিল।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, মধু আহরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু না হলেও ১ এপ্রিল সকালে মধু সংগ্রহে চারটি নৌকায় বেশ কয়েকজন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বনজীবী মৌয়ালদের হাতে পাশ উঠিয়ে দেন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য মতে, চলতি ২০২৫ মৌসুমে সরকারিভাবে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেড় হাজার কুইন্টাল ও মোমের লক্ষ্য মাত্রা ৪০০ কুইন্টাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এক এপ্রিল বুড়িগোয়ালিনী ও কোবাদক স্টেশন থেকে ৯টি পাশ সংগ্রহ করেছে মৌয়ালরা। এর মধ্যে সকালে চারটি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশ করে।

মৌয়াল ফজলুল হক বলেন, ‘ঈদের পর আনন্দের সঙ্গে আশা নিয়ে সুন্দরবনে যাচ্ছি মধু আহরণের জন্য। কিন্তু মৌসুম শুরুর আগে অবৈধভাবে সুন্দরবন থেকে যে হারে মধু চুরি হয়েছে, জানি না আশানুরূপ মধু পাবো কিনা। অল্প জায়গায় মধু আহরণ করে আমাদের পরিবার পরিজনের ভরণপোষণ ও মহাজনের চালান উঠানো কঠিন।
আগামী দিনে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যগুলোতেও মধু আহরণের অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

মৌয়াল ফজলুল হকের মতে, যে পরিমাণ মৌয়াল সুন্দরবনে যান তাদের জন্য মধু আহরণের এলাকা পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া অভয়ারণ্য থেকে মধু আহরণ না করার ফলে মধুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ণ
বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধিও লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিআরপি কেন্দ্রীয় কমিটির দলীয় প্যাডে কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক মোঃ সোহেল রানা এবং সদস্য সচিব মোঃ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার কমিটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা কমিটিতে স্থপতি মোঃ আরিফ হোসেন লিমন কে আহবায়ক এবং জুলফিকার আলী কে সদস্য সচিব মনোনীত করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন যথাক্রমে ফেরদৌস আলম শাকিল, মোঃ আশিক ইকবাল, মোঃ সোহাগ, তামিম তানভীর, নয়ন খান, মোঃ আবু হানিফ। এছাড়া যুগ্ম সদস্য সচিব পদে রয়েছেন যথাক্রমে আবু হাসান, তানভীর রাইহান খান, মোঃ মারুফ বিল্লাহ, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু এবং মোঃ জুবায়ের হোসেন। জেলা কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন এম. আব্দুর রহিম, সর্দার আসিফুর রহমান, কাজী আব্দুস সালাম, মোঃ আসিফ ইসলাম, নাঈম আহমেদ, নাহিদ পারভেজ, মোঃ সরিফুল ইসলাম, মোঃ মিনহাজুল আবেদিন, মোঃ রোকনুজ্জামান, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু, রাসেল আহমেদ, মোঃ ইসরাফিল বাবু, মোঃ শরিফুল ইসলাম, সাবিলার রহমান, রাকিমুন ইসলাম ও কাজী মোঃ আব্দুল ইরফান।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সাতক্ষীরা জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। দলের মূলনীতি, লক্ষ্য এবং কর্ম পরিকল্পনা সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা আজ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করছি।

এই কমিটি দলের সংগঠন, সম্প্রসারণ ও কর্ম কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবে। দলীয় সদস্য ও দেশবাসীর প্রতি আমাদের অঙ্গীকার রইল, যে আমরা জনগণের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।