খুঁজুন
সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক খোলামেলা আলোচনা, ছাড় দেয়নি কোনো পক্ষই বৈঠকে অকপটে ও গঠনমূলক আলোচনা, ছিল না আন্তরিকতা

সুন্দরবন নিউজ২৪ /ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক খোলামেলা আলোচনা, ছাড় দেয়নি কোনো পক্ষই বৈঠকে অকপটে ও গঠনমূলক আলোচনা, ছিল না আন্তরিকতা

চলতি বছরের ৫ আগস্টের আগেও ঢাকা-দিল্লি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সোনালি অধ্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তা এক নিমেষে শীতলতায় রূপ নেয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দেখা দেয় টানাপোড়েন। এমন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বসে দুই দেশ। ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে খোলামেলা, অকপট ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে, তা দু’পক্ষই জানিয়েছে। তবে আন্তরিকতার বিষয়টি কেউ জানায়নি। এফওসিতে কোনো পক্ষই একে অপরকে ছাড় দেয়নি। একে অপরের প্রতি আস্থাহীনতা ও সন্দেহ নিয়েই শেষ হয়েছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক।

এর আগে এ বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার সকালে প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এফওসিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিক্রম মিশ্রি। সোমবারই তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

এফওসি নিয়ে বৈঠক সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের আগের সময়ে ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সফর করলে স্বয়ং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বিমানবন্দরে চলে যেতেন। আর বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো খুবই ক্ষীণ স্বরে তুলে ধরা হতো। তবে এবার দেখা গেছে অন্য চিত্র। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান। বৈঠকেও বাংলাদেশ তার উদ্বেগের কথাগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরেছে।

বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুই দেশের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রীই প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতা সৌহার্দ্যপূর্ণ টেলিফোন আলাপ করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে গত আগস্টে ভার্চুয়ালি গ্লোবাল সাউথ সম্মেলনে তৃতীয় বক্তা হিসেবে কথা বলেন।

এর পর থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাদের মধ্যেও যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে তাদের মধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর আমার সফর ও আনুষ্ঠানিক পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেওয়া তারই অংশ।

বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়গুলোতে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে উল্লেখ করে বিক্রম মিশ্রি বলেন, সব আলোচনা খোলামেলা ও গঠনমূলকভাবে বলতে পারার সুযোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক চায়। তা জোর দিয়ে বলেছি। আমাদের সম্পর্ক অতীতে জনকেন্দ্রিক ছিল, এখনও রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। মানুষের কল্যাণ আমাদের সম্পর্কের অনুপ্রেরণা। এটি প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হয় বাংলাদেশে সমাপ্ত হয়ে যাওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে, আর এটি চলমান থাকবে। এটি দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, সংযোগ, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, উন্নয়ন সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের অভিন্ন স্বার্থ সম্পৃক্ততার মধ্যেও প্রতিফলিত হয়। দুই দেশের জনগণের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট এ সহযোগিতা অব্যাহত না রাখার কোনো কারণ নেই।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে ভারতের আগ্রহের কথা বৈঠকে জানিয়েছি। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা ও কল্যাণের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। সেই সঙ্গে সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও কূটনৈতিক সম্পদের ওপর দুঃখজনক আক্রমণ নিয়েও আলোচনা করেছি। এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি ভারত সম্পর্কটিকে ইতিবাচক, সামনের দিকে তাকানো ও গঠনমূলক দিকে এগিয়ে নিতে চায়।

সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ-ভারত এফওসি নিয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে দুটি দিক। প্রথমত, ফেরত আনার বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। দ্বিতীয়ত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে যে বক্তব্য রাখছেন, এ বক্তব্যের প্রতি আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আপনারা রোববার শুনেছেন, শেখ হাসিনা একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। সরকার এটি পছন্দ করছে না। ভারত জানিয়েছে, তার উপস্থিতি দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমার ধারণা এক ধরনের বোঝাপড়ার ফারাক রয়েছে। আজকের বৈঠকের পর বোঝাপড়ার ফারাকটি কমবে বলে প্রত্যাশা।

সম্পর্কে আস্থার ঘাটতি নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সমস্যাকে স্বীকার করে নিচ্ছি, বিশ্বাসের একটি ঘাটতি রয়েছে। আজকের বৈঠকটি হচ্ছে বিশ্বাসের ঘাটতি মেটানোর একটি পদক্ষেপ। এ পথ অনুসরণ করে পরবর্তী স্তরে আলোচনার আশা করব। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা মনে করি, বিক্রম মিশ্রি জনসমক্ষে যা বলেছেন, তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাই। সামনের দিনে এ সদিচ্ছা দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে উভয়েই বিদ্যমান সম্পর্ককে সামনের দিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে। বৈঠকে দু’পক্ষই পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা, অকপট ও গঠনমূলকভাবে আলোচনা করে। সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী হিসেবে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সব অনিষ্পন্ন বিষয়ের দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ দুই দেশের জনগণের ভেতর আস্থা ও বিশ্বাস বিনির্মাণের গুরুত্বের বিষয়ে জোর দেয় এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা রোধে ভারতের সক্রিয় ভূমিকা আশা করে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব এবং বিপ্লব-পরবর্তী সংখ্যালঘুদের প্রতি কথিত বৈরী আচরণ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তিকর বয়ান রয়েছে। ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ জোর দিয়ে বলেছে, এখানে বসবাসরত সব ধর্ম নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করে আসছে এবং এ বিষয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার সরেজমিন বাস্তব অবস্থা দেখা ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদেরও আহ্বান জানিয়েছে। বৈঠকে আমরা জানিয়েছি, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয়। বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য থেকে বিরত থাকে এবং অন্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিত।

সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে ভারত সরকারকে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা অনুরোধ করেছি। তা ছাড়া আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, মাদক পাচারসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম নির্মূলে ভারতের সহযোগিতাসহ সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে অনুরোধ করা হয়েছে। বৈঠকে আন্তঃনদী বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে তিস্তা নদীর পানিচুক্তি সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর। গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, তা নবায়নের প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও যে ক’টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন-সংক্রান্ত চুক্তি দুই দেশের মধ্যে আলোচনাধীন, সেসব সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। বন্যার পূর্বাভাস, ডেটা আদান-প্রদানসহ বন্যা প্রতিরোধে ভারতের সার্বিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ভারত অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান ট্যারিফ, প্যারা-ট্যারিফের মতো বাধা দূর করার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। ভারত থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত থেকে প্রায় ২ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। চলমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ সহযোগিতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়েও ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ভিসাপ্রাপ্তি সহজীকরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে: জসীম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর পর্যটন ও চিকিৎসার জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ভারত সফর করেন। তাদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজীকরণসহ অন্যান্য কনস্যুলার সেবা সহজীকরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আর এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশে অবস্থানরত ১২ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।

ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

সুন্দরবন নিউজ২৪/ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৫১ অপরাহ্ণ
ইউক্রেনকে ‘ধ্বংস’ করার হুমকি পুতিনের

রাশিয়ার কাজান শহরে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনকে ধ্বংস করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তাতারস্তান অঞ্চলের এই শহরে ছয়টি ড্রোন আবাসিক ভবনে এবং একটি ড্রোন একটি শিল্প কারখানায় আঘাত হানে। এই ঘটনার পর রোববার এক ভিডিও বক্তৃতায় পুতিন বলেন, যারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তারা এর বহু গুণ বেশি ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হবে এবং তাদের এই কাজের জন্য অনুশোচনা করতে হবে।

শনিবার সকালের ওই হামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো হতাহতের খবর জানানো হয়নি। তবে রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, জানালার কাচ ভেঙে তিনজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, ড্রোনের আঘাতে একটি উঁচু ভবনে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কাজান শহরটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত। যদিও ইউক্রেন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এটি কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুতিন অতীতে কিয়েভের কেন্দ্রে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে নতুন অগ্রগতির দাবি করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা খারকিভ অঞ্চলের লোজোভা গ্রাম এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলের সোনৎসিভকা গ্রাম দখল করেছে।

সোনৎসিভকা রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি কুরাখোভের নিকটে অবস্থিত। কুরাখোভে সম্পদসমৃদ্ধ এলাকা রাশিয়ার প্রায় ঘিরে ফেলা হয়ে গেছে এবং এটি মস্কোর জন্য দোনেৎস্ক দখলের চাবিকাঠি হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মস্কো ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যতটা সম্ভব এলাকা দখল করতে চাইছে। ট্রাম্প ইউক্রেন সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো নির্দিষ্ট সমাধানের পরিকল্পনা জানাননি।

রাশিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা এ বছর ১৯০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় বসতি দখল করেছে। ইউক্রেন বর্তমানে জনবল এবং গোলাবারুদের সংকটের কারণে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

সুন্দরবন নিউজ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯:৩৪ অপরাহ্ণ
১৫ বছরে পুলিশ নজিরবিহীন অন্যায় করেছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কু-প্রভাবে পুলিশ যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো পুলিশ করেনি। এসব কর্মকাণ্ড পুলিশকে মারাত্মকভাবে হেয় করেছে। পুলিশ এতটা নির্মম হতে পারে তা চিন্তা করতেই লজ্জা হয়।

শনিবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি এ সময় জানান, তিনি সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিট ঘুরে পুলিশ সদস্যদের মনের কথা জানার চেষ্টা করছেন। তাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য কি করা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কু-প্রভাব আর আসবে না। তবে সু-প্রভাবের প্রয়োজন আছে।

সারা দেশে মিথ্যা মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, কোনো নিরপরাধ লোককে গ্রেফতার করা যাবে না। বরং প্রাথমিক তদন্তে নিরপরাধ মনে হলে তাকে গ্রেফতার না করতে তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনতে, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে শনিবার সকালে সিলেটে পৌঁছান আইজিপি বাহারুল আলম। সিলেটে পৌঁছেই এসএমপি সদর দপ্তরে সিলেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।

প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। শুরুতেই পুলিশ রিফর্ম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে বিষয়টি পুলিশ রিফর্ম কমিশন চিন্তা করছেন, আমরাও তা চাই। সেটা হলো রাজনৈতিক কুপ্রভাব যেন আর পুলিশের ওপর না পড়ে। সু-প্রভাব আসতে পারে। কারণ রাজনীতিবিদরাই আমাদের কান্ডারি। তারাই দেশ চালাবেন। তবে তাদের কু-প্রভাব থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি।

আইজিপি বলেন, গত ১৫ বছরে দলীয়ভাবে এতো কু-প্রভাব আমাদের ওপর আসছে, হেন অন্যায় নেই যা আমরা করিনি। এটা আপনারাও জানেন আমরাও জানি। এটার জন্য আমরা অত্যন্ত দু:খিত এবং লজ্জিত।

বাহারুল আলম বলেন, ‘আমরা তো সেই বাহিনীর সদস্য, আমাদের মধ্যে সেই উপলব্ধিটা আসে, যখন এসব চিত্র দেখি। যেসব ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা পুলিশ ঘটায়নি। সেনাবাহিনী হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, কিন্তু পুলিশ এতো নির্মম তা আমি ব্যক্তিগতভাবেও ভাবতে পারিনা। এটা রাজনীতিবিদরা কেন করতে গেলেন? দলীয় কিংবা গোষ্ঠির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এমন আদেশ দেওয়া হলো যে, মানুষের প্রাণ সংহার করে ফেলবেন? আগে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাতো কিন্তু এভাবে প্রাণে মেরে ফেলবে- এর জবাব আমার কাছে নেই। যে পর্যায়ে পুলিশ চলে গেছে সেখান থেকে উত্তরণ ঘটানোই আমার বড় চ্যালেঞ্জ’।

পুলিশ যে কর্মস্পৃহা হারিয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের সহকর্মীরা মারা গেছে, মব জাস্টিস পুলিশের বিরুদ্ধেও হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে, মানসিকভাবে তাদের মধ্যে ঝড় বয়ে গেছে। শুধু পুলিশ নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ঝড় বয়ে গেছে। কারণ আমরা এসব দেখে অভ্যস্ত নই।

তিনি বলেন, পুলিশ যেহেতু একেবারে সামনের সারিতে ছিলো, তার তাদের ওপরেই প্রভাব বেশি পড়েছে। পুলিশ যখন দেখেছে, তার সহকর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে, আবার কেউ দৌড়ে এসে লাথি মারছে পুলিশকে। কারণ মানুষের ভেতরে এতো ঘৃণা জন্মেছে যে, তা আর মানুষ নিতে পারছে না। আর পুলিশ এইসব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাদের কর্মস্পৃহা হারিয়েছে। পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই ঢাকায় বসে না থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের কাছে যাচ্ছি, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা কি ভাবছে, তারা কি চায়- সেগুলো শুনে ব্যবস্থা নেওয়াই আমার কাজ। আমি হয়তো সব পারবো না, তবে তাদের মনের কষ্টের কথা শুনতে চাই, তাতে তাদের মন হয়তো হালকা হবে।

পুলিশ হত্যা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা প্রশমনে কি উদ্যোগ নেবেন- এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশ এখন একটা মনভাঙা অবস্থায় রয়েছে। যার যা সক্ষমতা ছিলো তাও এখন কাজ করছে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিশ্বাসটা ভেঙে গেছে, যে আমি আবার মানুষের কাছে যাব, কাজ করবে। ভয়ে, আতংকে, সহকর্মীদের মৃত্যুতে, তারপর আবার দেখেছে যে সিনিয়র অফিসাররা হুকুম দিয়ে পালিয়ে গেছে। কোথাও তো একজন এসপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেউ তো মারা যাননি! যারা মারা গেছে, তারা ইন্সপেক্টর টু কনস্টেবল। তার মানে আমরা অফিসাররা পালিয়ে গেছি পুরো ফোর্সকে অনিরাপদ করে। এখন এই ফোর্সকে আবারও উজ্জীবিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।

৫ আগষ্ট ও পরবর্তী সময়ে পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। এর মধ্যে দেড় হাজার অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি বলেন, এসব অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। তবে এসব উদ্ধার করা তখনই সম্ভব হবে, যখন সব মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে। তখন সমাজের মানুষজনই এসব অস্ত্রের খোঁজ দেবে।

এর আগে সারা দেশে নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইজিপি বলেন, ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্তে যাদের নিরপরাধ মনে হবে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করতে হবে যে, তাকে গ্রেফতার করা হবে না। এছাড়া একটি কমিটি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। যে কমিটি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই নিরপরাধ মানুষকে মামলা থেকে বাদ দিতে পারবেন।

এদিন দুপুরের পর সিলেট পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি। তাদের কষ্টের কথা শোনেন। তাদের কষ্ট লাঘবের আশ্বাস দেন।

পাকাপাকি ভাবে ভারত ছাড়ছেন কোহলি!

সুন্দরবন নিউজ২৪/স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ
পাকাপাকি ভাবে ভারত ছাড়ছেন কোহলি!

ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলি শিগগিরই পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে। কোহলির শৈশবের কোচ রাজকুমার শর্মা সম্প্রতি দৈনিক জাগরণ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কোহলি তার স্ত্রী আনুশকা শর্মা ও সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে বসবাস শুরু করার চিন্তা করছেন। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি, তবে দ্বিতীয় সন্তান আকায় জন্মের পর থেকেই কোহলি ও আনুশকা পরিবার নিয়ে লন্ডনে অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন।

রাজকুমার শর্মা বলেন, ‘হ্যাঁ, বিরাট তার স্ত্রী আনুশকা ও সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। খুব শিগগিরই তিনি ভারত ছেড়ে লন্ডনে স্থায়ী হবেন। তবে আপাতত কোহলি ক্রিকেটের পাশাপাশি বেশিরভাগ সময় পরিবারকে দিচ্ছেন।’

কোহলি ও আনুশকার লন্ডনে নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর থেকেই তাদের লন্ডনে কাটানো সময় আরও বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই দম্পতি খুব শিগগিরই স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করবেন।

৩৬ বছর বয়সী কোহলি ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে কতদিন খেলবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। সাম্প্রতিক সময়ে তার পারফরম্যান্স কিছুটা ম্লান থাকায় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভক্ত ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে।

১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে র‌্যাঙ্কিংয়ে কোহলি

এ বছরের শুরুতে অবসর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কোহলি জানিয়েছিলেন, অবসরের পর দীর্ঘ সময় তাকে আর দেখা যাবে না। আরসিবি-এর সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমাদের ক্যারিয়ারের একটা শেষ সময় থাকে। তাই আমি আগেভাগেই সব পরিকল্পনা করছি। আমি চাই না আমার ক্যারিয়ার শেষে কোনো অতৃপ্তি থাকুক।’

কোহলি আরও বলেন, ‘আমি যখন অবসর নেব, তখন দীর্ঘ সময়ের জন্য হারিয়ে যাব (হাসি)। তাই যতদিন খেলব, ততদিন নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এটাই আমাকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।’

কোহলির এই পরিকল্পনা তার ভক্তদের মধ্যে নতুন কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কবে তিনি পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমান।