খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের পাকিস্তানে না খেলা নিয়ে যা বললেন শাহিন আফ্রিদি

সুন্দরবন নিউজ২৪/স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ণ
ভারতের পাকিস্তানে না খেলা নিয়ে যা বললেন শাহিন আফ্রিদি

অবশেষে অবসান হলো সব নাটকীয়তার। এরইমধ্যে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে আইসিসি। এতেই প্রমাণিত, ২০২৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আইসিসির কোনো আসর খেলতে যাবে না ভারত। ঠিক একইভাবে পাকিস্তান দলও ভারতে খেলতে যাবে না। ম্যাচগুলো হবে নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে।

আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে আয়োজক স্বত্ত্ব থাকছে পাকিস্তানের হাতেই।

১৯ ফেব্রুয়ারি করাচিতে স্বাগতিক পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ওয়ানডে ফরম্যাটের এই আসরের।

এদিকে ভারতীয় ক্রিকেট দল যদি পাকিস্তানে খেলার জন্য সম্মত হতো, তাহলে খুব খুশি হতেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানালেন পাকিস্তানের অন্যতম সেরা এ পেসার।

এদিন করাচিতে কায়েদ-এ-আজম মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান আফ্রিদি। এ সময় পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা নেতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কায়েদ-এ-আজমের বাসভবন পরিদর্শন করা খুব আনন্দের বিষয়’।

পাকিস্তান দল দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে কাল। তবে এই সিরিজের দোলে নেই আফ্রিদি। সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজ খেলে দেশে ফেরা এই পেসার বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট দল ২০২৪ সালটি বেশ ইতিবাচকভাবেই শেষ করছে’।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৭টি উইকেট নিয়ে ৩-০ ব্যবধানের জয়ে বেশ জোরালো ভূমিকা রাখেন শাহিন। এর আগে দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেন ৩ উইকেট।

এদিকে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ১০ম সিজন এখন আলোচনায়। যার ড্রাফট হবে আগামী ১১ জানুয়ারি গওয়াদারে।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার উসমান খাজা আসন্ন এই টুর্নামেন্টের জন্য সই করেছেন। এর আগে তিনি ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে খেলেছিলেন।

দেশে ফিরেই মিজানুর রহমান আজহারীর স্ট্যাটাস

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:২০ অপরাহ্ণ
দেশে ফিরেই মিজানুর রহমান আজহারীর স্ট্যাটাস

মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মাওলানা ড. মিজানুর রহমান আজহারী। মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে দেশে এসেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন মিজানুর রহমান আজহারী।

পোস্টে আজহারী লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, নিরাপদে দেশে এসে পৌঁছালাম। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর, বাধাহীনভাবে আবারও প্রিয় মাতৃভূমিতে তাফসিরুল কুরআনের মহতি আয়োজনে অংশগ্রহণ করছি।

তিনি লেখেন, উদ্বোধনী প্রোগ্রাম হিসেবে আগামীকাল কক্সবাজারে পেকুয়ার বৃহত্তর সাবেক গুলদি তাফসির ময়দানে আলোচনা পেশ করব। এটি একটি ওয়ার্ম-আপ প্রোগ্রাম। মূলত নতুন বছর ২০২৫-এর জানুয়ারি থেকে বিভাগীয় সফর শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও লিখেছেন, প্রতিটি বিভাগেই একটি করে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে আছে। রাব্বে কারিম নব উদ্যমে এই দাওয়াতি অভিযাত্রায় যুক্ত রাখুন। আমাদের প্রচেষ্টায় ভরপুর বারাকাহ দিন। প্রজন্ম-ক্ষুধা নিবারণে বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে ইসলামের শাশ্বত বাণী উপস্থাপনের তাওফিক দিন।

এর আগে, প্রায় সাড়ে ৪ বছর পর চলতি বছরের ২ অক্টোবর দেশে ফিরেছিলেন তিনি। তবে মাত্র ৯ দিন দেশে অবস্থানের পর ১১ অক্টোবর আবারও মালয়েশিয়া চলে যান আজহারী। অক্টোবরের পর ডিসেম্বরে আবারও দেশে ফিরলেন তিনি।

মিজানুর রহমান ১৯৯০ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার ডেমরায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস কুমিল্লার মুরাদনগরের পরমতলা গ্রামে। তার বাবা একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। তার পরিবারে মা-বাবা ও এক ভাই রয়েছে।

মিজানুর রহমান ঢাকার ডেমরায় অবস্থিত দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০০৪ সালে দাখিল, ২০০৬ সালে আলিম পরীক্ষায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০০৭ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত মিসর সরকারের শিক্ষাবৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট করার জন্য মিসরে যান। সেখান থেকে ডিপার্টমেন্ট অব তাফসির অ্যান্ড কুরআনিক সায়েন্স থেকে ২০১২ সালে শতকরা ৮০ ভাগ সিজিপিএ নিয়ে অনার্স উত্তীর্ণ হন।

মিসরে পাঁচ বছর শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করার পর ২০১৩ সালে মালয়েশিয়া যান। সেখানে গার্ডেন অব নলেজ খ্যাত ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব কোরআন অ্যান্ড সুন্নাহ স্টাডিজ থেকে ২০১৬ সালে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন শেষ করেন।

বেতন ১৩ হাজার, চোখে হীরার চশমা আর বান্ধবীকে বিএমডাব্লিউ উপহার, কে সে?

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:৫৪ অপরাহ্ণ
বেতন ১৩ হাজার, চোখে হীরার চশমা আর বান্ধবীকে বিএমডাব্লিউ উপহার, কে সে?

চাকরি চুক্তিভিত্তিক। মাসিক বেতন ১৩ হাজার রুপি। অথচ সেই কর্মীর বিলাসী জীবনের গল্প শুনলে তাজ্জব বনে যেতে হবে। তিনি চোখে যে চশমাটি পরেন তাতে হীরা বসানো। বান্ধবীকে উপহার দিয়েছেন বিএমডাব্লিউ গাড়ি। শুধু কি তাই? বিলাসবহুল সুপরিসর বিএইচকে ফ্ল্যাটও দিয়েছেন প্রেয়সীর মন পেতে।

ঘটনা ভারতের মহারাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সবিষয়ক প্রশাসনিক বিভাগে কাজ করেন আলোচিত ব্যক্তি।

নিউজএইটিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতিবাজ ওই কর্মীর নাম হর্ষ কুমার ক্ষীরসাগর। তিনি তার কয়েকজন শাগরেদকে নিয়ে সরকারি কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা চুরি করেছেন। যার অংক ২১ কোটি ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার রুপি। জাল নথির সাহায্যে সংশ্লিষ্ট অ্য়াকাউন্টের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং পরিষেবা যুক্ত করে তিনি এই টাকা সরিয়েছেন। ওই টাকা দিয়েই বিলাসী জীবন যাপন করছেন হর্ষ।

ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চুরির টাকা দিয়েই একটি বিএমডাব্লিউ গাড়ি ও একটি বিএমডাব্লিউ বাইক কেনেন হর্ষ। পাশাপাশি বিমানবন্দরের কাছেই এক ফোর বিএইচকে ফ্ল্যাটও কেনেন ওই যুবক। সূত্রের দাবি, এই গাড়ি ও ফ্ল্যাট তিনি বান্ধবীকে উপহার দেওয়ার জন্য কিনেছিলেন। শুধু তাই নয়; এরপর হর্ষ কুমার শহরের একটি নামজাদা গহনার দোকানের যান। এবং সেখান থেকে হীরা বসানো একটি চশমা তৈরি করান, যা দেখে আশপাশের সবারই চোখ কপালে উঠে যায়।

ঘটনার তদন্তে জানা গেছে, হর্ষের এই পুকুরচুরিতে আরও দুজন জড়িত। তারা হলেন—যশোদা শেট্টি ও তার স্বামী বিকে জীবন। যশোদাও একটি সরকারি দপ্তরের চুক্তিভিত্তিক কর্মী। সম্প্রতি বিকেও একটি এসইউভি কিনেছেন। যার দাম ৩৫ লাখ রুপি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই এসইউভি চড়েই নাকি চম্পট দিয়েছেন হর্ষ।

হর্ষের দুর্নীতির প্রায় ছয় মাস পর এ ঘটনা টের পান সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশের তরফে কোনো বিবৃতি সামনে আসেনি।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

৪০ কোটির মধ্যে ৩০ কোটি বই ছাপানো বাকি

সুন্দরবন নিউজ২৪/ন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
৪০ কোটির মধ্যে ৩০ কোটি বই  ছাপানো বাকি

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ ও পাঠদান শুরু করতে অপেক্ষায় আছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী। অথচ এখনো অধিকাংশ বই ছাপানো বাকি রয়েছে। এবার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি বিনামূল্যের বই ছাপানোর কথা রয়েছে। এতে সব মিলিয়ে ১০ কোটি বই ছাপানোর কাজ শেষ হলেও আরও ৩০ কোটি বই ছাপানো বাকি রয়েছে। ফলে বছরের শুরুতেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বই হাতে পাবে না। এদিকে খরচ সাশ্রয় করতে এবার বই উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

মুদ্রণসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত এ সময় নতুন শিক্ষাবর্ষের সব বই ছাপানো শেষ হয়ে থাকে। সেখানে বেশকিছু শ্রেণির বই ছাপা শুরুই হয়নি। এছাড়া বই ছাপানোর জন্য বাজারে পর্যাপ্ত কাগজের সরবরাহ নেই। কাগজ মালিকরা একধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। বছরের শুরুতে কিছু বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানো সম্ভব হলেও সব বই ছাপা শেষ হতে মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। ফলে জানুয়ারির শুরুতেই সব শ্রেণিতে বই দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, এনসিটিবির সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। বই বিতরণ যত দেরি হবে, শিক্ষার্থীদের তত ক্ষতি হবে। শুরু থেকে নীতিনির্ধারকরা একধরনের সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। শিক্ষাক্রম আগে নাকি পাঠ্যপুস্তক আগে, সেটি ঠিক করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। শিক্ষাক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও আমরা ফিরে গিয়েছি আগের কারিকুলামে। এতে বিশ্ব এগিয়ে গেলেও আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একধরনে মানসিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। তারা একধরনের ট্রমার মধ্যে সময় পার করছেন। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সময় হলেও সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই যথাসময়ে দিতে না পারলে তাদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে আকৃষ্ট করতে হবে। পড়াশোনার অংশ হিসাবে তাদের এসব কার্যক্রমে অভ্যস্ত করাতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবক সমাবেশ করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে তিন মাস দেরিতে শুরু হয় নতুন শিক্ষাবর্ষের বইয়ের কার্যক্রম। এরপর শিক্ষা কারিকুলামে আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তে এবার পাঠ্যপুস্তকে স্থান পেয়েছে ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল কারিকুলাম। এতে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হলেও ১৩ দিনের মাথায় সেটি বাতিল করা হয়। এছাড়া এনসিটিবির বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সব সদস্য নতুন হওয়ায় এসব কার্যক্রম ছিল ধীরগতি। এতেও বেশ সময়ক্ষেপণ হয়েছে। এছাড়া পরিমার্জন ও সংশোধন কমিটি নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। এবার প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে জাতীয় সংগীত ও পতাকা ছাপানো হয় বইয়ের শেষে। এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। সবকিছু মিলে একধরনের হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। সামনে যে কয়দিন সময় আছে, এর মধ্যে ৩০ কোটির মতো পাঠ্যবই ছাপানোর সক্ষমতা দেশের মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের নেই। এছাড়া এ সময়ে চাহিদামতো মানের এত কাগজ পাওয়া নিয়েও কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের ছাপানোর কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চতুর্থ আর পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানো শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির প্রথমে তিনটি (বাংলা, গণিত ও ইংরেজি) বই ডেলিভারি দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো বেশির ভাগ ছাপানো বাকি রয়েছে। এছাড়া নবম ও দশম শ্রেণির সব বইয়ের ছাপানো চুক্তি শেষ করে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাণ্ডুলিপি দেবে এনসিটিবি। এরপর ছাপানোর কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে বই না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। বই হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের খেলাধুলা ও কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস নিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে। যদি শিক্ষার্থীদের বই পেতে খুব দেরি হয়, সেক্ষেত্রে সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত করতে হবে। পাশাপাশি তাদের হাইজেনিক বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও ক্ষতি কমে আসবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, বছরের শুরুতেই প্রাথমিকের পর্যায়ে প্রত্যেক শ্রেণিতে সব বই দেওয়ার চেষ্টা করছি। মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রত্যেক শ্রেণিতে তিনটি করে বই দেওয়ার কাজ চলছে। পাশাপাশি যেসব শ্রেণির ছাপানো চুক্তি বাকি রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। এছাড়া যেসব বইয়ের পরিমার্জন ও সংশোধন রয়েছে, সেগুলোও দ্রুত দেওয়া হবে। যথাসময়ে এ কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী সব বই কবে হাতে পাবে, এ বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সব শ্রেণির সব বই দেওয়া সম্ভব না হলেও শিক্ষার্থীদের কিছু বই দেওয়া হবে। তাছাড়া কাগজ সংকট নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো সত্য নয়। নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর জন্য প্রেস মালিকরা এসব অভিযোগ তুলছেন।

আগামী শিক্ষাবর্ষের নতুন বইয়ের কাগজের ওজন ৭০ গ্রাম থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮০ গ্রাম। আর উজ্জ্বলতা ৮০ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৮৫ শতাংশ। নতুন বছরের জন্য শুরু থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪০ কোটি নতুন বই ছাপানো হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী বইয়ের মান ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়ে একধরনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, বইয়ের কাগজের মান নিয়ে আমরা সচেতন। কোনো মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনসিটিবি কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৩ শিক্ষার্থীর জন্য ৯৬৪ লটে ছাপা হবে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই। এর মধ্যে প্রাথমিকের ২ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫ কপি বই। অন্যদিকে মাধ্যমিকের ২ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। এর মধ্যে ইবতেদায়ি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বইও যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ব্রেইল বই রয়েছে সাড়ে ৮ হাজার।

এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজে দেরি, নতুন কনটেন্ট যুক্ত হওয়া, বইয়ের কাভারে ব্যবহারের জন্য গ্রাফিতি নির্বাচনসহ বিভিন্ন কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিকের সব বই ছাপার কাজ শেষ হচ্ছে না। বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা যাতে কিছু বই হাতে পায়, সেই চেষ্টা করছে এনসিটিবি। সেজন্য ষষ্ঠ থেকে দশম-প্রত্যেক শ্রেণির তিনটি বই আগে ছাপানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান যুগান্তরকে বলেন, এখনো নবম-দশম শ্রেণির সব বই ছাপানোর চুক্তি শেষ হয়নি। এসব শ্রেণির কেবল নোহা পেয়েছে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এনসিটিবি ওয়ার্ক অর্ডার ঠিক না করে ডেলিভারির সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে, যেটি অযৌক্তিক। এছাড়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছবি ছাপানো নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তবে আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। এদিকে পেপার মিলগুলো সিন্ডিকেট করে কাগজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি টন কাগজে ২০ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। আর্ট কার্ডে প্রতি টনে ৪০ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। এতে এনসিটিবির উৎপাদন শাখার কোনো তৎপরতা নেই। এ বিষয়ে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত।