খুঁজুন
রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেসব কারণে দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক কিছুতেই সহজ হচ্ছে না

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
যেসব কারণে দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক কিছুতেই সহজ হচ্ছে না

মাত্র মাস তিনেক আগেও যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দু’দেশের নেতা-মন্ত্রী-কর্মকর্তারা অহরহ ‘সোনালি অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করতেন– সেই ঢাকা ও দিল্লির পারস্পরিক কূটনীতিতে এই মুহূর্তে একটা চরম অস্বস্তিকর শীতলতার পর্ব চলছে বললেও আসলে বোধহয় কমই বলা হয়!

বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর একশো দিন অতিক্রান্ত, কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আজ পর্যন্ত তার মুখোমুখি দেখাই হয়ে ওঠেনি। সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনের অবকাশে এরকম একটা বৈঠক আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধও জানিয়েছিল, কিন্তু ভারত তা এড়িয়ে গিয়েছে।

দুদেশের দুই বর্তমান নেতার মধ্যে এর মাঝে মাত্র একবারই টেলিফোনে কথা হয়েছে, কিন্তু ভারতের ভাষ্য অনুযায়ী সেখানেও প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গ। সুতরাং সেই টেলিফোন আলাপেও ভারতের দিক থেকে স্পষ্টতই ছিল ‘নালিশ’ বা ‘অনুযোগে’র সুর।

গত ৮ আগস্ট যেদিন মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন, সেদিনও এক্স হ্যান্ডলে তার প্রতি বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘শুভেচ্ছা’ জানালেও দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ‘অভিনন্দন’ জানাননি – কোনও কোনও পর্যবেক্ষক এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

বস্তুত নিউ ইয়র্কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক ছাড়া দু’দেশের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে এখনও কোনও ‘ইন্টারঅ্যাকশন’ই হয়নি। ভারতের হয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যাবতীয় আদানপ্রদান করছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা, যা কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘স্কেল ডাউন’ করারই ইঙ্গিত!

পাশাপাশি আরও কিছু ঘটনা গত তিন মাসে ঘটেছে, যা থেকে মনে করার যথেষ্ঠ কারণ আছে দিল্লি এখনও বাংলাদেশের নতুন সরকারকে ঠিকমতো ভরসাই করতে পারছে না।

যেমন, প্রায় মাসচারেক হতে চলল ভারত এখনো বাংলাদেশে তাদের ভিসা কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রেখেছে।

খুব জরুরি কিছু মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া বাংলাদেশি নাগরিকরা ভিসা পাচ্ছেন না বললেই চলে – আর ভারতও জানিয়ে দিয়েছে তারা যতক্ষণ না মনে করছে সে দেশে পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ হচ্ছে ততক্ষণ আগের মতো ভিসা ইস্যু করারও কোনও সম্ভাবনা নেই!

তাছাড়া কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও গত ১৯ জুলাই থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। একই হাল খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস বা ঢাকা-শিলিগুড়ি মিতালি এক্সপ্রেসেরও, যদিও বেশ কিছুদিন বিরতির মধ্যে দু’দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল অবশেষে শুরু হয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশে যে সব অবকাঠামো প্রকল্পে কাজ করছিল, তারও অনেকগুলোর কাজ জুলাই-অগাস্ট থেকে থমকে গেছে, আজ পর্যন্ত তা শুরু করা যায়নি। আদানি পাওয়ার-সহ বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থা বকেয়া অর্থ না-পেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে।

গত একশো দিনের ভেতর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে বন্যার জল ছাড়ার অভিযোগ বা দুর্গাপূজার মণ্ডপে হামলা নিয়ে একাধিক প্রকাশ্য বিবৃতি জারি করতেও দ্বিধা করেননি – যাতে বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা ছিল স্পষ্ট!

এই ধরনের জিনিস কিন্তু বিগত ষোলো-সতেরো বছরে কখনওই দেখা যায়নি– যা থেকে পরিষ্কার বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে একটা ‘ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ’ বা কেজো সম্পর্ক গড়ে তুলতেও দিল্লি রীতিমতো দ্বিধান্বিত।

ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তথা ঢাকায় নিযুক্ত প্রাক্তন হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা অবশ্য এর মধ্যে বিশেষ অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না।

মালয়েশিয়া থেকে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘সম্পর্ক তো একেবারে থেমে নেই, চলছে। দু’পক্ষের মধ্যে কোনও অপ্রীতিকর আদানপ্রদান হয়নি, কেউ কাউকে আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলেনি… এটাই কি যথেষ্ঠ নয়?’

শ্রিংলা বলেন, ‘আসলে এটা তো বুঝতে হবে বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা কোনও স্থায়ী সরকার নয়। তাদের ম্যান্ডেট কিছু থাকলেও সেটা খুব ‘লিমিটেড’- যে সে দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। তো এরকম একটা সরকারের সঙ্গে ভারতের নির্বাচিত সরকারের এনগেজমেন্টটাও লিমিটেড হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক।’

তবে দু’দেশের সরকারের মধ্যে সম্পর্কের পরিধি সীমিত থাকলেও ‘পিপল টু পিপল’ কানেক্ট বা মানুষে-মানুষে সংযোগটা কিছুতেই বন্ধ করা উচিত নয় বলেই তার অভিমত।

‘দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে যা-ই চলুক, এটা যেভাবে হোক বজায় রাখতে হবে,’ বলছেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

অবশ্য গত একশো দিনে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক যে প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে– তা নিয়ে দিল্লিতে অন্তত পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই, আর এর জন্য নির্দিষ্টভাবে কয়েকটি কারণকেও চিহ্নিত করছেন তারা।

হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ইস্যু

বিগত একশো দিন ধরে ভারত একেবারে সর্বোচ্চ স্তর থেকে লাগাতার বাংলাদেশের কাছে যে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছে, তা হলো সে দেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও অত্যাচারের ইস্যু।

প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে একাধিকবার মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব তার প্রশাসনের। শুধু তাই নয়, গত ২৬ আগস্ট যখন তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন, তখনও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রসঙ্গটি তোলেন এবং কিছুক্ষণ বাদে বিরল এক পদক্ষেপে সে কথা টুইট করেও জানিয়ে দেন!

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একের পর এক ব্রিফিং ও বিবৃতিতে বারবার বাংলাদেশ সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দুদেরও স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণের অধিকার আছে এবং দুর্গাপূজার সময় তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সে দেশের সরকারের।

কিন্তু ভারত সরকার ও ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিশ্বাস– এই গুরুতর বিষয়টিকে বাংলাদেশ সরকার হয় গুরুত্বই দিচ্ছে না, অথবা তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চূড়ান্ত ব্যর্থ হচ্ছে!

বিজেপির পলিসি রিসার্চ সেলের অনির্বাণ গাঙ্গুলির কথায়, ‘আজকের বাংলাদেশ গড়ে তোলার পেছনে সে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরাও যে ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছেন, দেশ বিনির্মাণে তাদেরও যে বিরাট অবদান আছে, সেই সত্যিটাই যেন ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’

বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ৫ অগাস্টের পর থেকে সে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুসারেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দু’হাজারের বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার কর্মকর্তা ভলকার টুর্ক পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে এসে এই পরিস্থিতির গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছেন, আর ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো এই সব হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ বলতেও বাকি রাখেননি।

‘কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বিষয়টা নিয়ে যেন পুরোপুরি ডিনায়াল মোডে চলে গেছে।’

‘তাদের উপদেষ্টাদের কথা থেকে মনে হচ্ছে হিন্দু নির্যাতনের সব খবরই যেন ফেক নিউজ, অতিরঞ্জন কিংবা রাজনৈতিক হামলার ঘটনা,’ বিবিসিকে বলছিলেন বিজেপির ঘনিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ শুভ্রকমল দত্ত।

‘চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে এই সেদিন নিরপরাধ হিন্দুদের ওপর বাংলাদেশের সেনা ও পুলিশ যে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে, সেটা ড. ইউনূসের সরকারের সম্মতি ছাড়া কীভাবে সম্ভব?’ তিনি বলেন।

‘এরপর তো বলতেই হবে তিনি হিন্দুদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে যে সব কথা বলছেন তা তো নির্জলা মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়!’ আরও যোগ করেন শুভ্রকমল দত্ত।

এ কথা ঠিকই যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ৫ই সেপ্টেম্বর পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনাগুলো অনেক ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে, আর সে কথা তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও জানিয়েছেন।

তার যুক্তি ছিল, বাংলাদেশে হিন্দুরা মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থক এমন একটা ধারণা আছে – আর অভ্যুত্থানের পর যেহেতু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে, তাই হিন্দুদেরও কেউ কেউ এ ধরনের রাজনৈতিক হামলার শিকার হয়েছেন।

‘আমি কখনওই বলছি না যা ঘটেছে সেটা ঠিক হয়েছে, কেউ কেউ হয়তো আবার এটাকে (হিন্দুদের) সম্পত্তি দখলের অজুহাত হিসেবেও ব্যবহার করেছে’, এ কথাও যোগ করেছিলেন ড. ইউনূস।

এর প্রায় দু’মাস পর অতি সম্প্রতি বিবিসি হিন্দিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আবার বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের সরকারের – এটা নিয়ে ভারতের বিচলিত বা উদ্বিগ্ন না হলেও চলবে!

অন্য দিকে সারা বিশ্বে নির্যাতিত হিন্দুদের সুরক্ষার ভার যে নরেন্দ্র মোদি সরকার নিজে থেকেই নিয়েছে বলে বারবার ঘোষণা করেছে – তাদের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে নীরব থাকা সম্ভব নয় বলেই বিজেপি নেতারা যুক্তি দিচ্ছেন।

শুভ্রকমল দত্ত তো এমনও বলছেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর এই নির্যাতন অব্যাহত থাকলে ভারতের উচিত হবে ড. ইউনূসের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা – যেমনটা করা হয়েছে আফগানিস্তানে তালেবান শাসকদের সঙ্গেও!

ফলে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা বা অত্যাচারের আসল মাত্রা যতটাই হোক, বিষয়টা ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কে ছায়াপাত করছে খুব গভীরভাবে।

শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দান

এই মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্কের মধ্যে আর একটি খুব বড় অস্বস্তির উপাদান হলো ভারতের মাটিতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি!

৫ আগস্টের পর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে একাধিকবার জানিয়েছে, সে দিন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ভারতে ‘সাময়িক’ আশ্রয় চেয়েছিলেন বলেই তা মঞ্জুর করা হয়েছিল। অন্তত একবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এটাও উল্লেখ করেছেন, ‘সুরক্ষার কারণে’ তাকে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

মূল কারণটা যা-ই হোক, বাস্তবতা হলো বাংলাদেশে গত জুলাই-অগাস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থান যার শাসনের বিরুদ্ধে ছিল, সেই শাসক নিজেই এখন প্রতিবেশী দেশের আশ্রয়ে ও আতিথেয়তায় রয়েছেন।

বহু পর্যবেক্ষক বিশ্বাস করেন, সেই অভ্যুত্থানের যেহেতু একটা ভারত-বিরোধী মাত্রাও ছিল – কারণ ভারতের সমর্থন ছাড়া এভাবে শেখ হাসিনার পক্ষে এতদিন ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা অসম্ভব হতো বলে আন্দোলনকারীরা ধারণা করতেন– আর সেই ভারতই যখন শেষমেশ অপসারিত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দিল, তাতে কূটনৈতিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস আরও জোরালো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নিজে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারতের মাটিতে বসে শেখ হাসিনা যেন রাজনৈতিক বিবৃতি না-দেন, ভারতকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সম্প্রতি স্বীকার করেছে, শেখ হাসিনার মুখে লাগাম পরানোর কথা তারা একাধিকবার ভারতকে বলেছে – কিন্তু তাতে তেমন কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর পাশাপাশি ‘গণহত্যা’র বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে যাতে বাংলাদেশে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়, সে জন্য তাকে ভারতের কাছে ফেরত চাওয়ার কথাও বলেছেন অর্ন্তবর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা। দু’দেশের মধ্যেকার প্রত্যর্পণ চুক্তির কথাও তুলেছেন তাদের কেউ কেউ।

সম্ভবত এটা জেনেই, যে ভারত তাকে কখনওই বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে না, কিন্তু তাতে কূটনৈতিক সম্পর্কের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে।

দিল্লিতে প্রথম সারির থিঙ্কট্যাঙ্ক মনোহর পারিক্কর আইডিএসএ-র সিনিয়র ফেলো তথা বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ স্ম্রুতি পট্টনায়ক সেই প্রথম দিন থেকে বলে আসছেন, শেখ হাসিনাকে ভারতে না-রাখতে হলেই দিল্লির জন্য সেটা সবচেয়ে ভালো অপশন হতো!

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন, ‘আমি এখনও মনে করি প্রথমেই শেখ হাসিনা যদি তৃতীয় কোনও দেশে চলে যেতে পারতেন, সেটা দিল্লির জন্য সেরা সমাধান হতো। হয়তো শেখ হাসিনার জন্যও!’

‘কিন্তু যেহেতু সেটা সম্ভব হয়নি এবং শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো ছাড়া এখন ভারতের সামনে কোনও উপায় নেই– তাই এটার পরিণাম (কনসিকোয়েন্স) আমাদের এখন ভোগ করতেই হবে।’

এই পরিণামের একটা দিক হলো ঢাকার নতুন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক মূল্যে দাম চোকানো।

আগস্টের মাঝামাঝি ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ সাময়িকীকে পররাষ্ট্রনীতির বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত কখনও নাক গলায় না, এই ‘মিথ’টাকে বেআব্রু করে দিয়েছিল শেখ হাসিনাকে ভারতে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার ঘটনা।’

ফলে ভারতের সমর্থনেই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে ছিলেন- বিগত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে জল্পনার আকারে থাকা এই মতবাদটা এখন এক ধরনের ‘কনফার্মেশন’ পেয়ে গেছে বলে অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, এবং একই কারণে ঢাকা ও দিল্লির সম্পর্কও তিক্ত থেকে তিক্ততর হচ্ছে।

কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির স্বার্থে ভারত কি ভবিষ্যতে কখনও শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারে?

‘কোনও প্রশ্নই ওঠে না। প্রথম কথা, বাংলাদেশে তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন তার কোনও নিশ্চয়তাই নেই। কেন ভারত তাকে একটা ক্যাঙ্গারু কোর্টের মুখে ঠেলে দিতে যাবে?’

‘দ্বিতীয়ত, আজ যদি ভারত শেখ হাসিনার সংকটের মুহূর্তে তার পাশ থেকে সরে দাঁড়ায় তাহলে আমাদের নেইবারহুডে কোনও দেশের কোনও নেতাই ভারতের বন্ধুত্বে আর কখনও ভরসা রাখতে পারবেন না,’ বিবিসিকে বলছিলেন ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ টিসিএ রাঘবন।

ফলে ধরেই নেওয়া যেতে পারে শেখ হাসিনা এখন লম্বা সময়ের জন্যই ভারতে থাকছেন – এবং যতদিন ধরে সেটা ঘটছে, ততদিন ঢাকা ও দিল্লির মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কটা স্বাভাবিক হওয়াটা খুবই কঠিন!

ঢাকার পালাবদলে দিল্লির হতাশা

গত ৫ অগাস্ট যে নাটকীয় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন এবং মাত্র আড়াই দিনের মধ্যে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয় – প্রতিবেশী ভারত সেই পরিস্থিতির জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না, তারা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি তাদের ঘরের দোরগোড়ায় এত দ্রুত এই ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে!

ভারতে একাধিক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক তাদের লেখালেখি ও বক্তৃতায় এ কথাটা খোলাখুলি স্বীকার করেছেন।

বস্তুত জুলাইয়ের শেষ দিকে বা অগাস্টের প্রথম দু-চারদিনেও ভারতের নর্থ ও সাউথ ব্লকের একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে একান্ত আলোচনায় বলেছিলেন, শেখ হাসিনা বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও নিশ্চিতভাবেই এই সংকটও ‘সারভাইভ’ করবেন– এটা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশই নেই!

শেষ পর্যন্ত সেটা যখন হলো না, তখন আক্ষরিক অর্থেই ভারতের মাথায় একরকম আকাশ ভেঙে পড়েছিল।

তার আগের দেড় দশক ধরে শেখ হাসিনার জমানায় ভারত বাংলাদেশে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ‘লগ্নি’ করেছে, তার ভবিষ্যৎ এখন কী হবে সেটাও দিল্লিকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।

বাংলাদেশে ক্ষমতার রাশ ইসলামপন্থীদের হাতে চলে যাচ্ছে কি না, তা নিয়েও খোলাখুলি আশঙ্কার কথা জানান দেশের অনেক নেতা-মন্ত্রী ও নীতি-নির্ধারক।

এই উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকেই দিল্লিতে ক্ষমতার অন্দরমহলে বাংলাদেশকে ঘিরে জন্ম নেয় একটা ‘ফ্রাসট্রেশন’ বা হতাশা– যার প্রতিফলন এখন ঢাকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কেও দেখা যাচ্ছে।

দিল্লির উপকণ্ঠে ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলছিলেন, “বিগত বহু বছর ধরে ভারতের ঘোষিত অবস্থান ছিল তারা বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও প্রগতি ও সমৃদ্ধির পক্ষে– যেটাকে শেখ হাসিনার শাসনের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন বলেই ধরে নেওয়া হতো।”

‘এখন রাতারাতি সেই অবস্থার পরিবর্তনের পর ভারত যেন ধরেই নিচ্ছে বাংলাদেশ একটা অস্থিরতা আর অস্থিতিশীলতার কবলে পড়েছে।’

‘তার ওপর যখন সে দেশের নতুন সরকার দিল্লির সঙ্গে সম্পর্কটাকে প্রকাশ্যে অন্তত বিশেষ একটা ‘ভ্যালু’ করছে না, তাতে বিরক্তিটা আরও বাড়ছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ড. দত্ত।

কোনও কোনও পর্যবেক্ষক বলছেন, বাস্তবিকই ভারতে একটা শ্রেণির ধারণা ছিল বাংলাদেশকে যে ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তাতে তাদের নতুন সরকার শ্রীলঙ্কার মতোই হয়তো ভারতের সাহায্য চাইতে বাধ্য হবে।

কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেছে, বাংলাদেশ হাত পাতলেও সেটা পেতেছে পশ্চিমা দেশগুলো কিংবা বিশ্ব ব্যাঙ্ক-আইএমএফের কাছে– আর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা ‘ডিফায়ান্ট’ বা পরোয়া-করি-না ভঙ্গি দেখানোর চেষ্টা করে চলেছে।এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অস্বস্তি বেড়েছে নিঃসন্দেহে।

তবে ভারতে সাবেক কূটনীতিবিদদের একটা অংশ আবার প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন, এখানে বিষয়টা মোটেই হতাশার কিছু নয়– বরং কূটনৈতিক বাস্তবতার, আর সেটা উপলব্ধি করতে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারই ব্যর্থ হচ্ছে।

ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, এমনই একজন সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা যেমন বিবিসিকে বলছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকার পূর্ণ মর্যাদায় ও সমানে-সমানে ডিল করবে ‘এটা আসলে আশা করা উচিতই নয়!’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতের কথায়, ‘ড. ইউনূসকে বলব, আপনার সরকারের সাংবিধানিক ভিত্তি কী, সেটাই তো স্পষ্ট নয়! আর আদৌ যদি কোনও বৈধতা থেকে থাকে – সেটা নব্বই দিনের বেশি নয়, আর তাও শুধু নির্বাচন আয়োজনের জন্য!’

‘সেই জায়গায় আমরা কী দেখছি, নব্বই দিন কেটে গেছে আর আপনারা দেশ সংস্কারে নেমেছেন! ইন্টারভিউ দিয়ে বলছেন, তিস্তা সহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন হতে হবে সমতা আর ন্যায্যতার ভিত্তিতে।’

‘আরে বাবা, ভারত আপনাদের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে কথা বলতে যাবে কোন দুঃখে?’

‘বাংলাদেশের মানুষের ভোটে জিতে আপনারা ক্ষমতায় আসেননি, আপনাদের কোনও ম্যান্ডেটও নেই এটা নিয়ে কথা বলার,’ চাঁছাছোলা ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি।

ঘটনা হলো, ভারতে যারা ক্ষমতার কেন্দ্রীয় বলয়ে আছেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে তার গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করেন, তাদের অধিকাংশ কিন্তু এই যুক্তিতেই বিশ্বাস করেন।

তবে অন্তর্বর্তী সরকার সে দেশে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে দিল্লির এই মনোভাবের পরিবর্তন হতে পারে, সেই ইঙ্গিতও কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে।

যতদিন না সেটা বাস্তবে ঘটছে, দিল্লি ও ঢাকার শীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলবে সেই সম্ভাবনা সত্যিই আসলে খুব ক্ষীণ!

শ্যামনগরে সিপিপি কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:৫৭ অপরাহ্ণ
শ্যামনগরে সিপিপি কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

শ্যামনগরে এক দুর্নীতিগ্রস্ত সিপিপি কর্মকর্তার দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১১ টায় সিপিপি উপজেলা কার্যালয়,(জেসি কমপ্লেক্স)এর সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সিপিপি শ্যামনগর পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে শ্যামনগর উপজেলা পৌরসভার সমস্ত নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবকগণ অংশ নেয়।

ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় শ্যামনগর পৌরসভার সিপিপি টিম লিডার মোঃ আব্দুর রশিদ নান্টু, ১নং ইউনিট টিম লিডার নজরুল ইসলাম মুন্না, ২ নং ইউনিট টিম লিডার, ভবেসিন্দু মন্ডল, ৩ নং ইউনিট টিম লিডার হাবিবুর রহমান ৪ নং ইউনিট টিম লিডার ইয়াছিন মোড়ল ৫ নং ইউনিট টিম লিডার রবিন্দ্রনাথ মন্ডল ৬ নং ইউনিট টিম লিডার শাহীন ভূইয়া, ৭ নং ইউনিট টিম লিডার আব্দুর রশিদ নান্টু। ৮ নং ইউনিট টিম লিডার হেলাল মাহমুদ, ৯ নং ইউনিট টিম লিডার দেবাশিস গায়েন সহ অন্যান্য রা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি(সিপিপি) সহকারী পরিচালক শ্যামনগর মুন্সি নুর মোহাম্মদ, দুর্যোগে কাজ করা সিপিপি সংগঠনকে একটা বাণিজ্যিক সংগঠন হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

নীতিমালা তোয়াক্কা না করে নিজের মনগড়া ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসতেছে, সাধারণ স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে স্বেচ্ছাসেবী কাজে মনোভাব নষ্ট করছেন।

সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক নির্দেশিকা -২০২১ অনুসারে সিপিপিতে যোগদানের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ নির্ধারণ থাকলেও এই নীতিমালা অমান্য করে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে নিপা চক্রবর্তী নামক একজন ৪০ উর্ধ্ব বয়স নারী স্বেচ্ছাসেবককে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

অপর দিকে রমজাননগর ইউনিয়নের তানিয়া নামক ১৬ বছর বয়সের নারী স্বেচ্ছাসেবককে নিয়োগ দিয়েছিলেন ।

কর্মকর্তার আন অফিসিয়াল তার কথা না শোনার কারনে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের মাছুরা নামক নারী স্বেচ্ছাসেবককে বিনা কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে কর্মকর্তার মনোনীত প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার কারণে রমজাননগরের আছমা মেম্বার, ও কৈখালীর রাবিয়া মেম্বারের সিপিপির আই ডি কার্ড দিতে তালবাহানা করেছে।

বক্তারা আরো বলেন:
এভাবে চলতে থাকলে শ্যামনগরের উপকূলীয় আমজনতা সিপিপি থেকে দুর্যোগের সময় সেবা পাবে না:
কর্মকর্তা মুন্সী নুর মোহাম্মদ একের পর এক নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করতে থাকে এবং তার সাথে সঙ্গ না দেওয়ায়, শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন টিম লিডার মোঃ আব্দুর রশিদ নান্টু নামে বিভিন্নভাবে মিথ্যা হয়রানি মূলক বেনামী অভিযোগ দিয়ে থাকেন ।

সর্বশেষ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক নামীয় ব্যক্তির পাঠানো অভিযোগে বিষয়টি পরিষ্কার হয়, মুন্সি নুর মোহাম্মদ, অভিযোগকারীদের স্থানে আব্দুর রাজ্জাকের নাম ব্যবহার করে ইয়াসিন মোড়ল এবং আব্দুর রশিদ নানটুর নামে পুনরায় অভিযোগ করে,
মিটিং সেমিনার কিংবা প্রশিক্ষণ কর্মশালায় স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে তুই তুকারি করে কথা বলেন এই কর্মকর্তা।
দুর্যোগের সময় বিশেষ মুহূর্তে অতি প্রয়োজনে কর্মকর্তাকে ফোন করলে ফোন কেটে দেন।
প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকরা অফিসে গেলে কর্মকর্তা বিরক্ত বোধ করেন।
স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে একে অপরের সাথে বিরোধ লাগিয়ে স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করেন এই কর্মকর্তা।

মন:পুত ব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে অফিশিয়ালি সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন বিশেষ করে যারা তার অনিয়ম কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকেন।

টাকার বিনিময়ে জাতীয় পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রকাশ্য সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন,কর্মকর্তা মুন্সি নুর মোহাম্মদ, তার কাছের ব্যক্তি রমজান নগর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক ফারুক হোসেন কে অফিসের নথি প্রকাশ করে, নায্য পুরষ্কার প্রাপ্য নজরুলের ডকুমেন্টস জাল করে ততকালীন ইউ এন ও কাছে প্রেরণ করে

এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ স্বেচ্ছাসেবকরা মানববন্ধনের মাধ্যমে কর্মকর্তা মুন্সি নুর মোহাম্মদের বদলি চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নির্বাচিত হতে পারলে বাহাদুরপুর ব্রিজ ও কচুয়া ফুটবল মাঠ এবং কলেজ তৈরি করব : কাজী আলাউদ্দীন

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:০১ অপরাহ্ণ
নির্বাচিত হতে পারলে বাহাদুরপুর ব্রিজ ও কচুয়া ফুটবল মাঠ এবং কলেজ তৈরি করব : কাজী আলাউদ্দীন

সাতক্ষীরার আশাশুনির কুল্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে ধানের শীষের নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুল্যা ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায়  কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উক্ত নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  

 কুল্যা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মনজুরুল হুদার সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মো: খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায়  সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের বিএনপি’র ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দীন।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক স.ম হেদায়েতুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস, সাবেক সদস্য সচিব মশিউর হুদা তুহিন, ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান লাল্টু প্রমূখ।

ধানের শীষের নির্বাচনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী আলাউদ্দীন বলেন, নির্বাচিত হতে পারলে বাহাদুরপুর ব্রিজ ও কচুয়া ফুটবল মাঠ তৈরি করব। এবং কচুয়ায় একটি কলেজ নির্মাণ করব।

এ সময় তিনি আরো বলেন বিগত ১৭ বছর ধরে আশাশুনি উপজেলায় কোন উন্নয়ন হয়নি, তার মধ্যে  কুল্যা ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ও কালভার্টের জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে,  এগুলোর উন্নয়ন করবো।

বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে এদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরাসহ সাধারণ মানুষ যেমন মায়ের কোলে শিশুরা  নিরাপদ থাকে, তেমনি করে আমার সময়ও নিরাপদে রাখবো। এছাড়া এই অঞ্চলের  জলাবদ্ধতা নিরসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন করব।
জনসভা শেষে বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে দর্শকদের ঢল; প্রতিটি ইউনিয়নে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা কাজী আলাউদ্দিনের

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে দর্শকদের ঢল; প্রতিটি ইউনিয়নে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা কাজী আলাউদ্দিনের

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩ লক্ষ টাকার শহীদ জিয়া স্মৃতি ৪ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা। বুধবার বিকেলে আশাশুনি উপজেলার শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল মাঠে রাজাপুর মধ্যম একসরা যুব সংঘের আয়োজনে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাতক্ষীরা–৩ (আশাশুনি–কালিগঞ্জ) আসনের ধানের শীষের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী কাজী আলাউদ্দিন।
ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হয় কালিগঞ্জ পি.ডি.কে. মিতালী সংঘ বনাম হাজিপুর ইয়ং স্টার ক্লাব। খেলার ২২ মিনিটে হাজিপুর ইয়ং স্টার ক্লাবের বিদেশি খেলোয়াড় জেরি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। তবে প্রথমার্ধের ৩১ মিনিটে কালিগঞ্জ পি.ডি.কে. মিতালী সংঘের ইব্রাহিম সমতার গোল করে ম্যাচে ফিরে আসেন।দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে কালিগঞ্জ পি.ডি.কে. মিতালী সংঘ আরও দুই গোল করে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে। শেষ পর্যন্ত ৩–১ গোলের ব্যবধানে হাজিপুর ইয়ং স্টার ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় কালিগঞ্জ পি.ডি.কে. মিতালী সংঘ। খেলা শেষে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি ও পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি কাজী আলাউদ্দিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  কাজী আলাউদ্দিন  বলেন, “যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে হলে খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমি নির্বাচিত হতে পারলে আশাশুনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে মডেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করব। যুবকদের মাঠে ফেরাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধকে টেকসই করে তোলা, সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করা এবং এলাকার ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

খেলাধুলা মানুষের মন–মানসিকতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি চাই আমাদের এলাকার তরুণরা সুস্থ বিনোদন আর খেলাধুলায় মনোনিবেশ করুক, দেশের ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত হোক।” তিনি আরও বলেন, “এলাকার উন্নয়ন, শিক্ষার প্রসার, ক্রীড়া সুযোগ বৃদ্ধি—সবকিছুর জন্যই আমি কাজ করে যাব। আশাশুনি ও কালিগঞ্জের মানুষের আস্থা অর্জনই আমার মূল লক্ষ্য।