বিরাট সুযোগ, ৩ লাখ কর্মী নেবে জার্মানি
ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ জার্মানি। অনেকের কাছে স্বপ্নের দেশ এটি। জার্মানিতে পাড়ি দেওয়ার জন্য চেষ্টার কমতি থাকে না তৃতীয় বিশ্বের মানুষের। বিশ্বজুড়ে অভিবাসন প্রত্যাশিরা মনে করেন, সুখ-স্বাচ্ছন্দের দেশ জার্মানিতে পা রাখতে পারলেই মিলবে অর্থনৈতিক মুক্তি। ধারণাটা হয়তো মিথ্যে নয়, ইউরোপের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ জার্মানির ক্ষেত্রে।
প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মানুষ কাজের সন্ধানে জার্মানিতে যাওয়ার আবেদন করেন। অবৈধ উপায়েও দেশটিতে ঢোকার চেষ্টা করে থাকেন অনেকে। সেক্ষেত্রে কাজ পেতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তবে এবার অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য বিরাট সুখবর দিয়েছে জার্মানি।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনবল সংকট কাটাতে বিপুল সংখ্যক বিদেশী কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার্লিন। এ লক্ষ্যে কর্মসংস্থান আইনও সংস্কার করেছে দেশটি। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ ৮৮ হাজার দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসন নিশ্চিত করা না গেলে ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানিতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। আর তাই ২০২৩ সালে কর্মসংস্থান আইন সংস্কার করে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য নিয়ম শিথিল করেছে জার্মানি। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজার ২০২৩ সালে এই আইন সংস্কারের সময় একে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক অভিবাসন আইন বলে অভিহিত করেছিলেন।
বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশনের গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৪০ সাল নাগাদ জার্মানির কর্মক্ষম জনসংখ্যা ৪৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন থেকে ৪১ দশমিক ৯ মিলিয়নে নেমে যাবে। ২০৬০ সালে এই সংখ্যা আরও কমে ৩৫ দশমিক ১ মিলিয়নে দাঁড়াতে পারে। এ অবস্থায় বছরে প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার দক্ষ বিদেশি কর্মী নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে জার্মানি।
বার্টেলসম্যানের অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সুজানে শুলজ বলেন, শ্রমবাজার থেকে বেবি বুমার্স প্রজন্ম বিদায় নেওয়ায় বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তিনি বলেন, জার্মানির অভ্যন্তরীণ দক্ষতার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রয়োজন। পাশাপাশি অভিবাসনও অপরিহার্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান অভিবাসনের গতি বাড়াতে এই প্রক্রিয়াকে দ্রুত ও স্বচ্ছ করতে হবে। চাকরির বাজারে বিদেশিদের সহজ প্রবেশাধিকার এবং তাদের যোগ্যতা সঠিকভাবে মূল্যায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। বাড়াতে হবে অভিবাসীদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাও।
আপনার মতামত লিখুন