খুঁজুন
শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেপরোয়া দুর্নীতি, উদাসীন ছিলেন দুদকের ৩ কমিশনার

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:২১ অপরাহ্ণ
বেপরোয়া দুর্নীতি, উদাসীন ছিলেন দুদকের ৩ কমিশনার

এ মুহূর্তে দুর্নীতি সারা দেশে ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় তার ঘনিষ্ঠরা ২ লাখ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেছেন। এর বাইরেও বিগত সরকারের সময়ে বিপুল অর্থ পাচার হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেও উঠে আসে তার পিওন জাহাঙ্গীর চারশ কোটি টাকার মালিক। কিন্তু সেই সময় জাহাঙ্গীরের দুর্নীতিও ধরতে পারেনি দুদক। চারশ কোটি টাকার বাইরেও দেশে-বিদেশে জাহাঙ্গীরের আরও কত সম্পদ আছে, এর কোনো হিসাব নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর একজন পিওনের দুর্নীতির এত সম্পদ থাকলে তার আশপাশে যারা ছিলেন, অর্থাৎ চার দফায় মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন, দলের নেতা হয়েছেন, পদপদবি পেয়েছেন, দলকে বিনা ভোটে ক্ষমতায় আনতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা কাজ করেছেন-তারা কী পরিমাণ দুর্নীতি করেছেন, তা ধারণারও বাইরে। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এত বছর যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে, সেদিকে নজর দেয়নি দুদক। নজর দেয়নি বড় বড় প্রকল্পের নামে ‘সাগরচুরি’র ঘটনার দিকেও।

দুদকের শীর্ষপদে যারা আসীন হন, তাদের নিয়োগ হয় রাজনৈতিক আনুগত্য বিবেচনায়। সরকারের আনুকূল্যে নিয়োগ পাওয়ায় তারা সরকারকে বিব্রত করতে চায়নি। উপরোন্তু মন্ত্রী তো দূরের কথা, কোনো এমপি বা সরকারদলীয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যম বা অন্য কোনো সূত্রে পেলেও অনুসন্ধান শেষে তারা পেয়ে যান ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’।

চুনোপুঁটি ধরার ক্ষেত্রে বা তাদের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদকের যতটা মনোযোগ ছিল-আমলা, পুলিশ প্রশাসন বা সরকারের অন্য দপ্তরের বড় পদের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ধরার ক্ষেত্রে ততটাই ছিল নমনীয়।

অথচ, দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার জন্য ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর (প্রায় ২০ বছর আগে) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করা হয়। সেই থেকে দেশের দুর্নীতি দমনের জন্য গঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারের আজ্ঞাবহ হিসাবেই কাজ করে যাচ্ছে।

তবে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দেশের দুটি বড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাসহ বড় বড় ব্যবসায়ী-শিল্পপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযান পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জেলে পাঠানো হয়। অনেকের সাজাও হয়।

কিন্তু ২০০৯ সালে জাতীয় নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। পালটে যায় অনেক কিছু। থমকে যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান। এমনকি ভাটা পড়ে দুর্নীতির অনুসন্ধান-তদন্ত এবং বিচারেও।

সেই থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশে এককভাবে দলটির শাসনকালে বিরোধী দলের নেতাকর্মী-জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে ব্যস্ত ছিল দুদক।

অন্যদিকে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতার লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অনুসন্ধান-তদন্তের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ছিল ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকায়।

শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের নেতা এবং দলটির আশীর্বাদপুষ্ট প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ‘ওয়ান-ইলেভেন’-এর সময় করা সব মামলা থেকে ‘দায়মুক্তির সনদ’ বা ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছে নির্বিচারে।

সরকারদলীয় কোনো প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মামলা বা সাজার ঘটনারও তেমন নজির নেই।

এমন বাস্তবতায় বর্তমান অনন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে দুদক সংস্কারে একটি কমিটি করে। তারা অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে সংস্কার প্রস্তাব দেবে সরকারকে।

এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় দুদকের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে দুদককে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া এ মহূর্তে জরুরি হয়েছে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি দমনে স্বাধীন সংস্থা থাকে। তারা সরকারের কোনো মন্ত্রী দুর্নীতি করলেও ধরে। কিন্তু আমাদের দেশে তা হয় না। দুদককে নিরপেক্ষ ও সাংবিধানিক বডি করা উচিত। এ প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্ষমতা দিতে হবে।

একই সঙ্গে বিগত ১৬ বছর ধরে দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা রাজনৈতিকভাবে বাড়াবাড়ি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বিষয়েও ভাবতে হবে।

দুদক কমিশনারদের উদাসীনতা প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞতা জানান, ২০০৪ সালের দুদক আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী দুদকের তিনজন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য বাছাই কমিটি গঠন বা এর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো বিধিমালা না থাকায় সরকারের পছন্দের বাইরে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারে না এ কমিটি।

আইনে পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। আইন করার পর থেকে গত ২০ বছর সরকার গঠিত বাছাই কমিটি দিয়েই ছয়জনের নাম গোপনে বাছাই করে, পরে তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে নিয়োগ দেয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর জন্য কোনো বিধি নেই। সরকারের খেয়ালখুশিমতো যাকে-তাকে গোপনে বাছাইয়ের নামে তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে নিয়োগ দেয়। তারা বলেন, এ বাছাইয়ের কাজটি গোপনে করা যাবে না। কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি স্বচ্ছ হতে হবে। যদি বর্তমান সিস্টেম অনুযায়ী ছয়জনের মধ্যে তিনজন কমিশনার নিয়োগের বিধান চালু থাকে, তবে বাছাই কমিটি যে ছয়জনের নাম প্রস্তাব করবে, তা বিধি অনুযায়ী গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশ সরকার বা দুদকের ওয়েবসাইটে দিতে হবে।

কমিশনার হওয়ার জন্য কারও আগ্রহ (ইও-এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) আছে কি না, তা জানতে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। যোগ্যরা আবেদন করবেন। তাদের মধ্য থেকে ছয়জনকে (যাদের মধ্যে তিনজনকে চূড়ান্ত নিয়োগের সুপারিশ করেন রাষ্ট্রপতি) কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, তাও জানাতে হবে। আবেদনকারীদের নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। যাচাই-বাছাই করার একটি মাপকাঠি থাকতে হবে। দেখতে হবে দুর্নীতি দমন বা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তার কোনো ভূমিকা আছে কি না। রাষ্ট্রের জন্য তার অবদান কী, দেশের জন্য তিনি কী কী করেছেন, দুর্নীতি বা সুশাসনসংক্রান্ত কোনো গবেষণা বা পাবলিকেশন্স আছে কি না, দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত কাজে কোনো পূর্ব-অভিজ্ঞতা আছে কি না-এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। দুর্নীতি দমনসংক্রান্ত কার্যক্রমে অভিজ্ঞতা নেই-এমন লোক এতদিন নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের কাজ বুঝতেই বছর চলে যায়।

দুদকের বর্তমান আইন অনুযায়ী কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে আইন, শিক্ষা, প্রশাসন ও শৃঙ্খলা বাহিনীতে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা বলেন, এ কয়টি যোগ্যতার বাইরেও নতুন করে দুর্নীতি দমন ও সুশাসন নিয়ে কাজ করেছেন-এমন যোগ্য লোককে যুক্ত করা দরকার। কমিশনার নিয়োগে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দল ও দেশপ্রেমিক সুশীল সমাজকে বাছাই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তারা বলেন, একই ক্যাডার সার্ভিস থেকে দুজনকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এটির ফল অতীতে ভালো হয়নি।

হংকংয়ের উদাহরণ টেনে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেদেশের দুর্নীতি দমন সংস্থার প্রধানের কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্ষমতা। কিন্তু বাংলাদেশের দুদকে প্রধান হিসাবে একজন চেয়ারম্যান থাকলেও তার এককভাবে তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আদলে দুদক প্রধানের অধীনে দুজনের স্থলে চারজন সদস্য রাখা যেতে পারে। কারণ, এ মুহূর্তে অর্থ পাচারসহ দুর্নীতির আকার-প্রকৃতি বেড়েছে। ঋণখেলাপি বেড়েছে। এছাড়া যারা সরকারের অন্য দপ্তর থেকে দুদকে প্রেষণে আসবেন, তাদের মেয়াদ হতে হবে দুই বছর। প্রেষণে কোনো কর্মকর্তাকে দুদকে আনতে হলে দুর্নীতি দমন নিয়ে কাজ করেছেন বা এ সংক্রান্ত পূর্ব-অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তার। দুদকে যাদের প্রেষণে আনা হয়, তাদের পরিচয় ওয়েবসাইটে দিতে হবে। নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতির মাধ্যমে দুদকের শূন্য পদগুলো পূরণ করতে হবে।

পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

সুন্দরবন নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:১২ অপরাহ্ণ
পশ্চিম সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম আজ থেকে শুরু হল।

৭ই এপ্রিল সোমবার সকাল ১১ টায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আয়োজনে বুড়িগোয়ালিনী ৭১নং ফরেস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, নৌ পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মী, এনজিও সহ সর্বোপরি মৌয়ালদের নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও ) এ  জেড এম হাছানুর রহমানের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিভিন্ন এনজিও
প্রতিনিধিগণ,জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবক এবং গণমাধ্যম কর্মী।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হাছানুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩৬৪ পাশে ২৪৭১ মাধ্যমে ১২৩৫.৫০ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয় ও ৩৭০.৬৫ কুইন্টাল মোম সংগ্রহ হয়। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয় ২৭,৯২,২৩০ টাকা। ২০২৫ সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩৭ টা মধুর পাশ হয়েছে।


প্রসঙ্গতঃ বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাস নিয়ে ১ এপ্রিল সকাল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে এবার মধু আহরণ মৌসুমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো আজ ৭ এপ্রিল।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, মধু আহরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু না হলেও ১ এপ্রিল সকালে মধু সংগ্রহে চারটি নৌকায় বেশ কয়েকজন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বনজীবী মৌয়ালদের হাতে পাশ উঠিয়ে দেন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য মতে, চলতি ২০২৫ মৌসুমে সরকারিভাবে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেড় হাজার কুইন্টাল ও মোমের লক্ষ্য মাত্রা ৪০০ কুইন্টাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এক এপ্রিল বুড়িগোয়ালিনী ও কোবাদক স্টেশন থেকে ৯টি পাশ সংগ্রহ করেছে মৌয়ালরা। এর মধ্যে সকালে চারটি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশ করে।

মৌয়াল ফজলুল হক বলেন, ‘ঈদের পর আনন্দের সঙ্গে আশা নিয়ে সুন্দরবনে যাচ্ছি মধু আহরণের জন্য। কিন্তু মৌসুম শুরুর আগে অবৈধভাবে সুন্দরবন থেকে যে হারে মধু চুরি হয়েছে, জানি না আশানুরূপ মধু পাবো কিনা। অল্প জায়গায় মধু আহরণ করে আমাদের পরিবার পরিজনের ভরণপোষণ ও মহাজনের চালান উঠানো কঠিন।
আগামী দিনে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যগুলোতেও মধু আহরণের অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

মৌয়াল ফজলুল হকের মতে, যে পরিমাণ মৌয়াল সুন্দরবনে যান তাদের জন্য মধু আহরণের এলাকা পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া অভয়ারণ্য থেকে মধু আহরণ না করার ফলে মধুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ণ
বিআরপি সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা : আহবায়ক স্থপতি আরিফ হোসেন – সদস্য সচিব জুলফিকার আলী

জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধিও লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিআরপি কেন্দ্রীয় কমিটির দলীয় প্যাডে কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক মোঃ সোহেল রানা এবং সদস্য সচিব মোঃ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সাতক্ষীরা জেলার কমিটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা কমিটিতে স্থপতি মোঃ আরিফ হোসেন লিমন কে আহবায়ক এবং জুলফিকার আলী কে সদস্য সচিব মনোনীত করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন যথাক্রমে ফেরদৌস আলম শাকিল, মোঃ আশিক ইকবাল, মোঃ সোহাগ, তামিম তানভীর, নয়ন খান, মোঃ আবু হানিফ। এছাড়া যুগ্ম সদস্য সচিব পদে রয়েছেন যথাক্রমে আবু হাসান, তানভীর রাইহান খান, মোঃ মারুফ বিল্লাহ, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু এবং মোঃ জুবায়ের হোসেন। জেলা কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন এম. আব্দুর রহিম, সর্দার আসিফুর রহমান, কাজী আব্দুস সালাম, মোঃ আসিফ ইসলাম, নাঈম আহমেদ, নাহিদ পারভেজ, মোঃ সরিফুল ইসলাম, মোঃ মিনহাজুল আবেদিন, মোঃ রোকনুজ্জামান, মোঃ আব্দুস সালাম বাবু, রাসেল আহমেদ, মোঃ ইসরাফিল বাবু, মোঃ শরিফুল ইসলাম, সাবিলার রহমান, রাকিমুন ইসলাম ও কাজী মোঃ আব্দুল ইরফান।

কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন জাতীয় ঐক্য, সুশাসন এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সাতক্ষীরা জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। দলের মূলনীতি, লক্ষ্য এবং কর্ম পরিকল্পনা সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা আজ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করছি।

এই কমিটি দলের সংগঠন, সম্প্রসারণ ও কর্ম কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবে। দলীয় সদস্য ও দেশবাসীর প্রতি আমাদের অঙ্গীকার রইল, যে আমরা জনগণের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করব।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।

আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়ার বাধ ভে‌ঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লা‌বিত

সুন্দরবন নিউজ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৩ অপরাহ্ণ
আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়ার বাধ ভে‌ঙে অন্তত ১০ গ্রাম প্লা‌বিত

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোল‌পেটুয়া নদীর বে‌ড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লা‌বিত হ‌য়ে‌ছে। ভে‌সে গে‌ছে হাজার হাজার বিঘার মৎস‌্য ঘের। এতে গ্রামবাসীর ঈদ আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়েছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে আমরা ঈদের নামাজ আদায়ে ব্যস্ত ছিলাম। নামাজ শেষে জানতে পারলাম আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে ধ‌সে প‌ড়ে‌ছে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার দিয়ে দ্রুত লোকজনকে ভাঙ্গন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের চেষ্টা ক‌রে। দীর্ঘ সা‌ড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা ক‌রেও শেষ রক্ষা হয়‌নি। সা‌ড়ে ১১টার দি‌কে প্রবল জোয়া‌রের তো‌ড়ে বা‌ধের অব‌শিষ্টাংশ ভে‌ঙে গি‌য়ে লোকাল‌য়ে পা‌নি ঢুক‌তে শুরু ক‌রে।

স্থানীয়রা জানান, ইতোম‌ধ্যে বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, আনু‌লিয়াসহ আশপা‌শের আরও ৬টি গ্রা‌মে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। এসব গ্রা‌মের বা‌ড়ি ঘ‌রে পা‌নি ঢু‌কে‌ছে। মৎস‌্য খামার ভে‌সে গে‌ছে। দ্রুততম সম‌য়ে বাধ বাধ‌তে না পার‌লে পার্শ্ববর্তী খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নও প্লা‌বিত হ‌তে পা‌রে।

স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে সম্পূর্ণ খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে হ‌য়ে‌ছে। পাউবোর লোকজন ছু‌টি‌তে। তারা ফেরার চেষ্টা কর‌ছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদেরকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হ‌চ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।