চট্রগ্রামে আওয়ামী রাজনীতিতে দু:সময়ের সাহসী নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর


Admin প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২, ৭:১৩ অপরাহ্ন / ৪১৬
চট্রগ্রামে আওয়ামী রাজনীতিতে দু:সময়ের সাহসী নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর

মোঃ আনোয়ারুল ইসলামঃ
তরুণের তারুণ্য যুবকের যৌবন দিয়ে আওয়ামী রাজনীতির দু:সময়ে যারা রাজপথে ছিলেন সেই দু:সময়ের দু:সাহসী নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন। কারো দৃষ্টিতে বাবর একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতা কারো দৃষ্টিতে মানবতার প্রতিক কারো দৃষ্টিতে একজন দক্ষ্য সংগঠক আবার কারো কারো দৃষ্টিতে বাবর রাজনীতির কুলিশিত নেতা। বাবরকে চেনার মত চিন্তে হলে হযরত খোয়াজ খিজির (রা:)’র চশমা দিয়ে দেখতে হবে। যে সব ব্যঙ্গ চরিত্রের মানুষেরা বাবরের ভালো কাজকে প্রত্যাখান করে দোষ ত্রুটি খুজতে যায় তাদের উচিত বাবরকে চেনার জন্য খোয়াজ খিজির (রা:)’র চশমা পরিধান করা।

রাজনীতির বাজারে অনেক ধরনের খেলা এবং মেলা বসে থাকে সেই খেলা এবং মেলাতে যারা জয় হতে পারে তাদেরকে আমরা বাহ্ বাহ্ দিয়ে থাকি। কর্মী প্রিয় সুবিধাবঞ্চিত এবং জামাত বিএনপির আতঙ্ক অন্যতম নেতা নাম হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। তার রাজনৈতিক অঙ্গনে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা দেখে অনেকেই হিংসাতিত হচ্ছে। যা অত্যন্ত দু:খজনক ও লজ্জাজনক দু:সময়ে যারা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে রাজনীতির সাগরে পাড়ি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে সময়ের সাহসী পুরুষ হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর আজকে হয়ত কোননা কোন কারণে প্রবাসে দিন অতিবাহিত করে যাচ্ছে।

বাবর প্রবাসে থাকলেও তার মন-প্রাণ রয়েছে এই দেশে। তার রাজনীতির সাংগঠনিক দক্ষতা চ্যালেঞ্জ করার কেউ আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করিনা। অনেকেই উপরের আশির্বাদ ও মহাব্বতে রাতারাতি নেতা পরিণত হলেও বাবরের ইতিহাস ভিন্নতর। যে ব্যক্তি তৃণমূল থেকে রাজপথ দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে তা বাবরের তুলনা বাবর নিজেই অন্য কারো সাথে বাবরের রাজনীতিক কৌশল তুলনা করার মত নয়। আজকে বাস্তব প্রেক্ষাপটে যারা বাবরকে অনুসরন করে তাদের উদ্দেশ্যে বাবর নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে। যা বলার মত নয়।

হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে নিয়ে ব্যঙ্গ চরিত্রের মানুষেরা অসুন্দর-অপ্রিয় কিছু রূপকথার কাহিনী বানিয়ে লিখে থাকে যা একজন নির্ভিক লেখকের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা যে যেই স্থান থেকে লিখিনা কেন একটি মানুষের ভুল ভ্রান্তিকে প্রধান্যতা না দিয়ে তার ভালো কাজের প্রতি সম্মান জানিয়ে যদি লিখতে পারি তাহলে একজন সংগঠক নির্ভিক রাজনৈতিক কর্মীর প্রতি সম্মান জনানোর অন্যতম পন্থা হতে পারে। তাই আজকের সময়ের সাহসী যুবনেতা বাবরকে নিয়ে কিছু কথা বলার।

বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামের যে কয়জন ছাত্রলীগ নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দু:সময়ে দু:সাহসী নেতা ভূমিকায় অবতীর্ন ছিলেন। তারমধ্যে অন্যতম হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। ৮০ দশকের শেষের দিকে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন। ৯০ এর পর বিএনপির ছাত্রলীগ নিধন, জামাত শিবিরের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তান্ডবলীলা, বিশেষ করে শিবির কর্তৃক কলেজ দখল।

আওয়ামী লীগের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচী পালনে বাঁধা প্রদানসহ অসংখ্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা কর্মীদেরকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ। আওয়ামী লীগ কর্মি নিধন-দহন চলছিলো তখন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরই রাজপথে সাহসী ভূমিকা নিয়ে তা প্রতিহত করত। যা আজকের প্রেক্ষাপটে রূপকথার কাহিনী।

চট্টগ্রাম রাজনৈতিক নেতাদের সুপরিচিত একটি নাম বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। চট্টগ্রাম যুবলীগসহ সাধারণ ছাত্র জনতার মুখে মুখে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ছিলেন একজন অতি প্রিয়মুখ।

চট্টগ্রাম মহানগরে প্রায় ছাত্র জনতার সাথে কথা বলা হলে জানা পারে দলের দুঃসময়ে তাঁর ভূমিকার কথা। বিশেষ করে বিরোধী দল থাকার সময় মাঠে থেকে সংগঠনকে ধরে রেখেছিলেন ত্যাগী নেতা হেলাল আকবর। জানতে পারা যায় সংগঠনের সু-সময়ে গুটি কিছু নেতার হিংসার শিকারে আজ তিনি দেশের বাহিরে।

চট্টগ্রামে খুব কম মানুষ আছে যারা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর চৌধুরী সহযোগীতা পাননি। অধিকাংশ মানুষের সুখে দুখে সবসময় পাশে ছিলেন তিনি। চট্টলার বীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর সংস্পর্শে থেকে চট্টগ্রামকে শুধু তিনি দিয়েই গেছেন।

বাবর বঙ্গবন্ধু আদর্শে আদর্শিত হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন ১৯৮৮ সালে নন্দনকানন ইউনিট ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। পর্যায়ক্রমে ১৯৮৯ সালে এনায়েত বাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে ওমরগণি এম.ই.এস. কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রসংসদ এর জি-এস নির্বাচিত, ১৯৯৯ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গঠিত চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ এর সদস্য, ২০১০ সালেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ এর সদস্য এবং ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ এর উপ-অর্থ সম্পাদক।

হেলাল আকবর চৌধূরীর বাবর জীবন কাহিনী কোন কল্পকাহিনী নয়, এ হচ্ছে বাবরের ত্যাগী রাজনৈতিক পরিচয়। ১৯৮৯ সালে যখন সৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে চট্টল বীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী সহ অন্যান্য সিনিয়ার নেতাদের নির্দেশনা মোতাবেক আন্দোলনে রাজপথ নেতৃত্ব দিয়ে গেছে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। ১৯৯০ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকার এর অধীনে জাতীয় নির্বাচনে সুক্ষ কাটচুপির মাধ্যমে বিএনপি- জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে।

ক্ষমতায় এসেই চার দলীয় জোটের ক্যাডার সন্ত্রাসীরা আওয়ামীলীগ কর্মীদের উপর নির্যাতন, খুন, গুম, শুরু করলো সাথে সংখ্যালঘুদের ঘর- বাড়ি জায়গা দখল সহ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে শুরু করে। চট্টগ্রামে তৎকালীন বিএনপি এর মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় নিটুল- ছুট্টু- জসিম- রূপা সহ আরো অনেকে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ যুবলীগ আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে মূর্তিয়মান আতংকে পরিণত হয়েছিল, তখন বাবর এর নেতৃত্বে নন্দনকানন থেকে ছাত্রলীগ এর একটি অংশ নিটুল- ছুট্টুদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলো। বাবরের বলিষ্ট নেতৃত্বের কারনে সেদিন রুখে দাঁড়িয়েছিল পুরো চট্টগ্রাম।

রাজনীতি করতে গিয়ে বাবর বিএনপি জামাত জোটের আমলে ৩৭ বার কারা বন্দী হয়েছেন। তাছাড়া এমন এমন দিন গেছে জেল থেকে মুক্তি পেয়েই আবার পরেরদিন সকালে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। তবুও বাবর সংগঠনের হাল ছাড়েনি।বিএনপি জামাত জোট বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। বাবর কোন সময় বিএনপি জামাতের সাথে আতাঁত করেনি। চট্টগ্রামে শিবিরের দূর্গখ্যাত চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেষ্টুন লাগিয়ে জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত করে জামাত শিবিরের শক্ত ঘাটি ভেঙ্গে দিয়ে শিবির সন্ত্রাসীদের বিতারিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন এই হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

এদিকে সাম্প্রতিককালে নগরীর সি আর বি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একটি জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছিলে সে মামলায় ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে আসামী করা হয় কিন্তু পিবিআই তদন্ত করে দেয়া মামলার চার্জশীটে স্পষ্ঠ বলেছেন এ ঘটনায় বাবর জড়িত নয়, এবং তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেবার জন্য সুপারিশ করেছেন। সেদিন সিআরবির ঘটনায় বাবর দলীয় কোন্দলের বলি হয়েছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চট্টগ্রাম মহানগরীতে অতীত থেকে যারা বিএনপি জামাতকে সাহায্য করে এসেছে তাদের কথা বলতে সবাই ভয় পায়, কারণ আওয়ামীলীগ এর রাজনীতিতে তাদের অতীত ইতিহাস স্বচ্ছ নয়। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় যুবলীগনেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকে ২১ বছর আওয়ামীলীগ বা তার অংগ সংগঠনের যে সব নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে রাজপথে ছিলো তারা এমন কেউ কি আছেন? যিনি মামলা হামলার স্বীকার হয়ে জেলজুলুম সয্য করেনি, আমি বলবো যারা ঐ সময় মামলা হামলার স্বীকার হয়নি তারা মায়ের বুকে ঘুমিয়েছে।

বর্তমানে চট্টগ্রামের মশৃন রাজপথে যারা নেতা নামে পরিচিত তারা বাবর বা তার বন্ধুদের মতো কতটুকু ত্যাগ দিয়েছেন? সেই সব দিনগুলোতে খেয়ে না খেয়ে সিনিয়ার নেতাদের নির্দেশমতো আমি নেতা কর্মীদের নিয়ে রাজপথে ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকবো। বিএনপি জামাত এর সাথে লিয়াঁজু করি নাই করবো না।

সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ব্যাক্তি স্বার্থে যে জনগনের জানমালের ক্ষতিসাধন করছে, যার কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই, তারা বাবরকে নিজের স্বার্থহাসিলের জন্য সন্ত্রাসী বলে। রাজনৈতিকভাবে যারা মামলার আসামী তারা সন্ত্রাসী কি করে হয় তাতো বুঝিনা? রাজনীতি করতে গিয়ে বাবর বা তার বন্ধুরা তাদের কারো বাপ দাদার ভিটা মাটি উদ্ধার করতে রাজপথে গিয়ে মামলা হামলার স্বীকার হয়নি, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে জনগনের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে, এবং মামলার স্বীকার হতে হয়েছে।

বাবরের রাজনীতি শুরু হয়েছে চট্টল বীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর হাত ধরে। বাবর ছিলেন এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর একান্ত বিশ্বস্ত কর্মী হিসাবে প্রমানিত ও পরিচিত। অপ্রিয় হলেও সত্য, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্নিত হয়ে অনেকেই বাবরের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। যা সভ্য সমাজের কাম্য নয়।